বৃহস্পতিবার ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়

ডেস্ক রিপোর্ট   |   বুধবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট  

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে দাপুটে জয়, দ্বিতীয় ম্যাচে কষ্টার্জিত জয় এবং তৃতীয় ম্যাচে লজ্জাজনক পরাজয় – এমন ছিল বাংলাদেশের পরিসংখ্যান। তবে দেশের ক্রিকেটভক্তদের মনে আশা ছিল, টাইগাররা পারবে কিউইদের বিপক্ষে সিরিজ জিতে আরেকটি ইতিহাস গড়তে। তাদের সেই বিশ্বাসের মূল্য দিয়েছে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। আজ বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। এর ফলে চলমান সিরিজের পরিসংখ্যান দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ ৩, নিউজিল্যান্ড ১।

 


প্রথমে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড ৯৪ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশকে। মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের দলীয় ৮ রানে আউট হন ওপেনিংয়ে নামা লিটন দাস। তিনি করেন ১১ বলে ৬ রান। কোল ম্যাকনকির বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটের কাছে ফিন অ্যালেনের হাতে ক্যাচ জমা দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।

 

পাওয়ার প্লে’র ওভারে তখন স্বভাবতই রানের গতি হারিয়েছে টিম বাংলাদেশ। অঘটন ঘটে ষষ্ঠ ওভারে। এ ওভারে বাংলাদেশের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিক ও সাকিবকে তুলে নেন অ্যাজাজ প্যাটেল। বাঁহাতি এই স্পিনারকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন সাকিব। তিনি করেন ৮ বলে ৮ রান। সাকিবের পর নামেন মুশফিকুর রহিম। তিনি প্রথম দুটি বল ডট দিয়ে তৃতীয় বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। টাইগারদের সংগ্রহ তখন ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩২ রান।

 

এরপর আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখের সঙ্গে জুটি গড়েন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। মন্থর শুরুর পর দ্বাদশ ওভারে কোল ম্যাকনকিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যাট খুলে খেলার ইঙ্গিত দেন তিনি।

দুজনের জুটি যখন বেশ জমে উঠেছে তখন আবারো অঘটন। দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান সেট ব্যাটসম্যান নাঈম। ব্লেয়ার টিকনারের বল পুল করে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে পাঠান নাঈম। বল কিপার টম ল্যাথামের গ্লাভসে জমার সময় বেশ দূরে ছিলেন তিনি। শেষে মরিয়া হয়ে ডাইভ দিয়ে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন উইকেটে। কিন্তু পারেননি, এর আগেই বেলস ফেলে দেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক। ভাঙে ৫০ বল ৩৪ রানের জুটি। ৩৫ বলে ২৯ রান করে ফিরে যান নাঈম। বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ১৪.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ৬৭।

 

নাঈমের পর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী হন আফিফ হোসেন। এরপর আর কোনো বাধার মুখে পড়তে হয়নি এ দুজনকে। রয়ে-সয়ে খেলে তারা দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। শেষ ওভারে দরকার ছিল ২ রান। কিন্তু মাহমুদউল্লাহর যেন আর ধৈর্যে কুলাচ্ছিল না। ইনিংসের শেষ ওভারে ম্যাকনকির প্রথম বলেই ৪ হাঁকিয়ে খেলার যবনিকা ঘটান তিনি।

 

অপরাজিত ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহর সংগ্রহ ৪৮ বলে ৪৩ রান। অন্যদিকে তাকে শেষদিকে সঙ্গ দেয়া আফিফের সংগ্রহ ১০ বলে ৬ রান।

 

এর আগে নাসুম আহমেদ আর মোস্তাফিজুর রহমানের বোলিং তোপে ইনিংসের ৩ বল বাকি থাকতে মাত্র ৯৩ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। নাসুম-মোস্তাফিজ দুজনই নেন ৪টি করে উইকেট।

 

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা কিউইদের শুরুটা ভালো করতে দেয়নি বাংলাদেশ। নাসুম আহমেদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে চাপে পড়ে সফরকারীরা। প্রথম ওভারেই বাঁহাতি এই স্পিনারকে আক্রমণে নিয়ে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

 

ওই ওভারের চতুর্থ বলে রাচিন রবীন্দ্রকে (০) তুলে নেন নাসুম। সুইপ করতে গিয়ে কিউই ওপেনার বল ভাসিয়ে দেন বাতাসে। শর্ট ফাইন লেগ থেকে দৌড়ে এসে ক্যাচ তালুবন্দি করেন সাইফউদ্দিন। ওই ওভারে এক রানও খরচ করেননি নাসুম।

 

সাকিব আল হাসান ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে এসে দেন ১০ রান। ফিন এলেন হাঁটু গেড়ে রিভার্স সুইপ করে অবিশ্বাস্য এক ছক্কা হাঁকান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে। তবে তৃতীয় ওভারে সেই অ্যালেনকেও আউট করেছেন নাসুম।

 

আরেকটি রিভার্স সুইপ খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এবার টাইমিং মেলাতে না পেরে মারমুখী কিউই ওপেনার (৮ বলে ১০) পয়েন্টে হন সাইফউদ্দিনের সহজ ক্যাচ। ১৬ রানে ২ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।

 

চাপের মুখে কৌশল বদলে ফেলে সফরকারীরা। তৃতীয় উইকেটে টম ল্যাথাম আর উইল ইয়ং রানরেটের দিকে নজর না দিয়ে দেখেশুনে খেলতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত তাদের থিতু হয়ে যাওয়া জুটিটি (৪৫ বলে ৩৪) একাদশতম ওভারে ভাঙেন শেখ মেহেদি হাসান।

 

টাইগার অফস্পিনারকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে চেয়েছিলেন ল্যাথাম। কিন্তু কিউই অধিনায়ক ঘূর্ণিবল বুঝতে পারেননি। অনেকটা সামনে এগিয়ে যাওয়া ল্যাথামকে (২৬ বলে ২১) সহজেই স্টাম্পিং করেন নুরুল হাসান সোহান।

 

এর পরের ওভার ফের নাসুম ঝলক। এবার টানা দুই বলে দুই ব্যাটসম্যানকে সাজঘরের পথ দেখান এই বাঁহাতি। ওভারের দ্বিতীয় বলে বোল্ড করেন হেনরি নিকোলসকে (১)। পরের বলে টার্ন বুঝতে না পেরে ব্যাট পেতে দিয়ে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ হন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম (০)।

 

টম ব্লান্ডেলকে উইকেটে থিতু হতে দেননি মোস্তাফিজুর রহমান। ১৬তম ওভারে তার স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে ব্যাট ধরে দেন ব্লান্ডেল (৪), মিডঅন থেকে দৌড়ে এসে দারুণ এক ক্যাচ ধরেন নাইম

Facebook Comments Box

Posted ৮:১৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

Desh24.news |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
এম আজাদ হোসেন সম্পাদক ও প্রকাশক
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয়

শ্রীসদাস লেন,বাংলাবাজার , ঢাকা-১১০০/ ঘিওর, মানিকগঞ্জ।

হেল্প লাইনঃ +৮৮০১৯১১৪৭৭১৪১/০১৯১১২২৭৯০৭

E-mail: infodesh24@gmail.com