ডেস্ক রিপোর্ট | বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট
আব্দুর রাজ্জাক, (মানিকগঞ্জ) :
মানিকগঞ্জের ঘিওরে আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে গরু চুরির ঘটনা। গত দুই দিনে ঘিওর ইউনিয়ন থেকে ১০ টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। এদিকে গরু চুরির আতঙ্কে ঘুম হারাম হয়ে গেছে উপজেলার প্রতিটি গ্রামের গরু পালনকারী খামারি ও সাধারণ গরুর মালিকদের। সঙ্ঘবদ্ধ একটি চক্র গত বছর দুয়েক ধরে শীতের এই সময় পাড়ায় পাড়ায় হানা দেয়। যেন গরু চুরির হিড়িক পরে। এমনকি এই চোর চক্রের সাথে স্থানীয় গরু বিক্রির দালাল ও কসাইদের যোগসাজসে চুরিকৃত গরু নির্জন স্থানে জবাই করে রাতের আঁধারে গোশত পাচার করে দিচ্ছে। এই গোশত রাতের মধ্যেই চলে যায় জেলা শহর কিংবা অন্যত্র গোশত বিক্রয় খানায়- এমন অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোর রাত ৩ টার দিকে উপজেলা সদর ইউনিয়নের পশ্চিম দোতরা গ্রামের মৃত আরমান আলীর ছেলে আবুল বাশারের ৪ টি গরু যার আনুমানিক মূল্য তিন লক্ষ বিশ হাজার টাকা চুরি হয়ে গেছে। ঐ রাতেই একই গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে তফিজ মাতাব্বরের ৩ টি একটি গাভি ও দুইটি বাছুর গরু চুরি হয়েছে। যাহার আনুমানিক মূল্য প্রায় দুই লক্ষ টাকা। এই গরু পালনই ছিল তাদের অর্থনৈতিক উপার্জনের একমাত্র সম্বল। চুরি যাওয়ায় এখন তারা সবাই সর্বশান্ত হয়ে গেছে।
এর আগের রাতে (মঙ্গলবার দিবাগত রাতে) কৃষি খামারি মোঃ আনোয়ার হোসেনের প্রায় দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা মূল্যের ৩ টি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। ভোর রাতে রাস্তার পাশে গরুর মাংস নিয়ে ১ টি গরুর মৃত বাচ্চা ও চামড়া ফেলে রেখে যায়। এলাকার লোকজন ভোরবেলা রাস্তার পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে এ দৃশ্য দেখতে পায়।
এছাড়াও সম্প্রতি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ফলসাটিয়া বাসস্ট্যান্ডর ঠিক উত্তর পাশে সরিষা ক্ষেতে রক্তাক্ত গরুর মাথা, চামড়া ও ভুঁড়ি পাওয়া যায়। গত দুই বছর আগে উপজেলার বানিয়াজুরী বেড়িবাঁধ, মহাদেবপুর, ধুলন্ডী, সাটুরিয়া, হরিরামপুরেও এমন অমানবিক কর্মকান্ডের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ভূক্তভূগী পরিবারগুলো।
চঙ্গ শিমুলিয়া এলাকার কৃষি খামারি মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, প্রতিদিনের মতো রাতে গোয়াল ঘরে গরু দেখতে উঠি। কিন্তু গরু দেখতে যাওয়ার সময় দেখি আমার ঘরের দরজা বাইরে শেকল দিয়ে আটকানো। পরে পাশের লোকজন ডাকাডাকি করে এনে দরজা খুলি। ঘর থেকে বেড়িয়ে গোয়াল ঘরের সামনে গিয়ে দেখি আমার গরু গুলো নাই। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও গরু গুলো পাইনি। আমার গরু গুলোর আনুমানিক মূল্য আড়াই লক্ষ টাকা। আমি রাতেই থানায় ফোন দিয়ে ছিলাম কিন্ত তারা না এসে আমাকে থানায় যেতে বলেছেন।
চঙ্গ শিমুলিয়া এলাকার মোঃ হারুন মাষ্টার জানান, বিগত কয়েক বছর যাবত এধরনের গোশত চুরির ঘটনা ঘটেছে। পশ্চিম দোতরা গ্রামের আবুল বাশার, তফিজ মাতাব্বর ও শিমুলিয়া এলাকার আনোয়ারের গরুগুলো চুরি হওয়ায় ওই পরিবারগুলো একবারে পথে বসে গেল।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় চঙ্গশিমুলিয়ার খামারি আনোয়ার হোসেনের তিনটি গরু চুরি যাওয়ার শোক সহ্য করতে না পেরে গত বুধবার ভোর রাতে আনোয়ার হোসেনের বাবা আমজাদ মাষ্টার বুকের ব্যাথায় তিনি মারা যায়।
ঘিওর থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মহব্বত খান বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ খামারীদের সাথে কথা বলেছি।এ ঘটনায় সড়কে থানা-পুলিশের টহলের পাশাপাশি বিভিন্ন যানবাহনেও তলাশি জোরদার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ এই চোরচক্রকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।।
Posted ৭:৪৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১
Desh24.news | Azad
.
.