ডেস্ক রিপোর্ট | বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট ২০২১ | প্রিন্ট
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়ার লাশ নেই, ওখানে যায় কেন?’ সম্প্রতি চন্দ্রিমা উদ্যানে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনার সমালোচনা করে এ কথা বললেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের (উত্তর ও দক্ষিণ) উদ্যোগে শোক দিবস উপলক্ষে স্মরণসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি জানে না সেখানে (চন্দ্রিমা উদ্যানে) জিয়া নাই, জিয়ার লাশ নাই? তাহলে এতো নাটক করে কেন? খালেদা জিয়া বা তারেক জিয়া কি কখনো তার লাশ দেখেছে? ওখানে একটা বাক্স নিয়ে এসেছিল। সেখানে গিয়ে মারামারি ধস্তাধস্তি কেন? মারামারি ধস্তাধস্তির অভ্যাস তাদের এখনো যায়নি।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান কোথায় যুদ্ধ করেছে, এমন নজির নাই। অস্ত্রহাতে নিয়ে যুদ্ধ করে নাই। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বলে নেতৃত্বে ছিল। কিন্তু যুদ্ধ লাগলেই দূরে থাকতো।’
জিয়াউর রহমান সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্রখালাস করতে গিয়েছিল বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগণ তাকে ঘেরাও করে আটকও করে। তাকে ধরে এনে স্বাধীনতার ঘোষণাপাঠ করানো হয়। প্রথমদিকে অনেক আপত্তি ছিল তার। জনগণের চাপে পাঠ করেছিল।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই জিয়াউর রহমানকেই পেয়েছিল খন্দকার মোশতাকরা মূলশক্তি হিসেবে। মোশতাক-জিয়া মিলেই ওই চক্রান্তটা (১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড) করেছে।’
মোশতাকের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি হয়েছিল, কতদিন ছিল? বেঈমানদের ব্যবহার করে সবাই, বিশ্বাস করে না। মোশতাক রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনমাসও পূর্ণ করতে পারে নাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করা এবং স্বাধীনতাটাই ভুল, সেটা দেখানোর জন্য সবই করেছে তারা। এক্ষেত্রে খালেদা-জিয়া কেউই কম করেননি। জিয়াউর রহমানই করেছে সবচেয়ে বেশি। শিক্ষার্থীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া, ভোট চুরিসহ সবই করেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার মৃত্যুভয় নেই। কোনো আকাঙ্ক্ষাও নেই। ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য ছিল- বাংলাদেশ ব্যর্থ হোক, স্বাধীনতার চেতনা মুছে যাক; সেটাই করতে দেবো না। জাতির পিতার নাম তারা এখন আর মুছতে পারবে না। যে ইতিহাস তারা মুছতে চেয়েছিল, তারা আর পারবে না। আমার দেখা নয়াচীন বেরিয়েছে। জাতির পিতার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা রিপোর্টও সাত খণ্ডে বেরিয়েছে, বাকিটাও বের হবে।’
দেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল থেকে বাংলাদেশ উন্নত দেশ করবো, এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। আজকের বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার কমে ২০ ভাগে নেমেছে, মাথাপিছু আয় ২২২৭ ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে, রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়নে উন্নীত।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের জাতির পিতা স্নেহ করতেন। মর্যাদা দিতেন। সেজন্য সেনাবাহিনীতে উপ-প্রধান পদ না থাকলেও জিয়াউর রহমানের সংসার রক্ষায় ঢাকায় এনে তাকে সে পদ দিয়েছিলেন।’
৭৫ এর স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা দরিদ্র জাতিকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে দেবেন, সেই ওয়াদাই তিনি করেছিলেন। শুধু বলেন নাই, মাত্র সাড়ে তিন বছরে করেও দেখিয়েছিলেন। সে সময়ও স্বাধীনতাবিরোধীরা অপপ্রচার করেছিল, চিলমারীতে বাসন্তী নামক পাগলকে জাল পরিয়ে দেখিয়েছে, কাপড় দিতে পারে না। অথচ তখন কাপড়ের দাম ছয়-সাত টাকা আর জালের দাম ১৫০ টাকা ছিল।’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাদের খান, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ কামাল, উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক আখতার হোসেন, উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা।
গণভবনপ্রান্তে স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।
Posted ৮:৪৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট ২০২১
Desh24.news | Azad
.