আব্দুর রাজ্জাক ঘিওর মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট পর স্কুলে উপস্থিত হওয়ার কারনে মোঃ মাহিন (১৩ ) নামে ৭ম শ্রেনীর এক ছাত্রকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক মোঃ সাঈদ মিয়ার বিরুদ্ধে। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের উত্তর তরা জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। মাহিন উত্তর তরা গ্রামের মোঃ উজ্জল মিয়ার ছেলে। আহত শিক্ষার্থী স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা নিয়েছে, এখন সে বাড়িতে শয্যায় যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। এঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও তদন্ত চান ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষরা ওই শিক্ষার্থীর বাড়ি গিয়ে তার খোঁজ খবর নেন। এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে দেরীতে স্কুলে আসার জন্য ধর্মীয় শিক্ষক মোঃ সাঈদ মিয়া মাহিনকে বাঁশের লাঠি (বেত) দিয়ে বেধরক পেটানোর ঘটনা ঘটে। স্কুল শেষে বিকেলে বাড়ি আসার পর ওই শিক্ষার্থীর শরীর ফোলা এবং জ্বর আসলে পরিবারের কাছে ঘটনাটি বলে। এরপর স্থানীয়ভাবে তার চিকিৎসা চালান পরিবার। এঘটনায় এলাকাবাসী বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠলে ঘিওর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
আহত ওই ছাত্র ঘটনার বর্ননা দিয়ে জানায়, দুপুরে ক্লাস চলাকালীন সময়ের ১০ মিনিট পরে ক্লাসে প্রবেশ করায় তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে হাত, পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন ওই শিক্ষক। অনেক কান্না করে স্যারের কাছে ক্ষমা চাইলেও নির্যাতন থেকে রেহাই পাইনি।
ওই ছাত্রের বাবা মোঃ উজ্জল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১০ মিনিট পরে স্কুলে উপস্থিত হওয়ায় বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মোঃ সাঈদ মিয়া তার ছেলে মাহিনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলে গেছে। অনেক আঘাতের চিহ্ন আছে। পরে আহত অবস্থায় মাহিনকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক মোঃ সাঈদ মিয়ার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ খোরশেদ আলমের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে, ছাত্রকে পেটানোর বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, আমরা তো বিদ্যালয়েই ছিলাম তেমন কিছু হয়নি। তবে আমি শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়েছিলাম, পরিবারের সাথে বিষয়টি মিটমাট হয়েছে ।
ঘিওর থানার ওসি মো: আমিনুর রহমান বলেন,শিক্ষার্থীকে বেধরক পেটানোর ঘটনায় স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে পরে। এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে ঘিওর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে অবগত হলাম। এ বিষয়ে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য: ২০১০ সালের ৯ আগস্ট দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি প্রদান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে পরিপত্র জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যারা শারীরিক শাস্তি দেবেন, তাদের বিরুদ্ধে গ্রহণ করা হবে আইনগতব্যবস্থা।
Posted ৮:৩৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০২৩
Desh24.news | Azad
.