শনিবার ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফুলবাড়ীতে ভরা বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই,ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির

ডেস্ক রিপোর্ট   |   শনিবার, ১৬ জুলাই ২০২২ | প্রিন্ট  

ফুলবাড়ীতে ভরা বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই,ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির

মেহেদী হাসান,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

সম্প্রতি সময়ে দেশের কয়েকটি জেলায় বন্যা দেখা দিলেও দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চলছে তীব্র খরা ও অনাবৃষ্টি। খাল বিল ও নদীতে পানি শুখিয়ে গেছে জমির মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে । পানির অভাবে খাঁ খাঁ করছে মাঠ-ঘাট। আমন ধান রোপণের সময় বিলম্ব হয়ে পড়ছে। ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে সেচ পাম্প দিয়ে আমন ধান রোপনের প্রস্তুুতি নিচ্ছেন।


 

আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষা ঋতু। আষাঢ় মাসে মাঠ-ঘাট বৃষ্টির পানিতে টইটম্বুর থাকে। কৃষক আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করেন। সাধারণত আষাঢ় মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে এই অঞ্চলের কৃষকরা আমন রোপান করতে ব্যস্ত সময় পার করেন। কিন্তু এবছর এই এলাকায় তেমন বৃষ্টিপাত নেই। প্রচন্ড তাপদাহ তীব্র খরা  আর  অনাবৃষ্টিতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে,হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র সহ ফসল চাষাবাদ। বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক জমিতে সম্প‚রক সেচ দিয়ে চারা বাঁচিয়ে রেখেছেন কৃষক। এতে ধানের ফলন নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সুত্রে জানাগেছে, ফুলবাড়ী উপজেলায় ৩৪,ব্রি-৪৯, সম্পা কাটারী, ব্রি-৯৩, ৯৪, সোনামুখি, রঞ্জিত, এবং হাইব্রিড জাতের টিয়া, ধানিগোল্ড, এজেড ৭০০৬ জাতের রোপা আমন ধান চাষাবাদ হয়ে থাকে। এবছর এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভায় মোট ১৮ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে ৬১ হাজার ৯১৬ মেট্রিকটন রোপা আমন চাষাবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বীজতলা রোপনের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৯০৯হেক্টর জমিতে, যার লক্ষমাত্রা ইতিমধ্যে পুরণ হয়েছে। প্রতি বছর আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে বৃষ্টির পানিতে আমন ধান রোপণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন কৃষক। কিন্তু এবার মাসব্যাপী অনাবৃষ্টির কারণে পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে পানির অভাবে অনেক কৃষক ধান রোপণ করতে পারছেন না।

 

উপজেলার পৌর এলাকার সুজাপুর গ্রামের কৃষক দুলাল রায় বলেন, ফুলবাড়ীতে এবছর আষাঢ় মাস জুড়েই চলছে স্বরণ কালের খরা। ১৫ আষাঢ় থেকে আমন ধান  রোপন করা শুরু হয়। তিনি ৩ বিঘা জমিতে আমন লাগাবেন। বীজতলা প্রস্তুত কিন্তু বৃষ্টির পানির অভাবে জমিতে ধান রোপন করতে পারছেন না। আমন রোপনে দেরী হলে ফলন কম হবে। তবে আকাশের বৃষ্টি না হলে বিকল্প সেচ দিয়ে রোপা লাগাতে হবে। তাতে খরচ বেশী হবে।

 

কৃষখ কমল রায় ৪ বিঘা জমিতে আমন চাষ করবেন। বৃষ্টির কারণে জমিতে হাল দিয়ে প্রস্তুত করতে পারছেন না এবং রোপা লাগাতেও পারছেন না। খরার কারণে বীজ তলা রক্ষা করতে চেষ্টা করছেন মাত্র।

 

সুজাপুর গ্রামের কৃষক অশিস রঞ্জন দাস বলেন, তিনি ১৩ বিঘা জমিতে আমন চাষ করবেন। আষাঢ় মাস শেষ । এখনও বৃষ্টি নেই। তাই তিনি শ্যালো মেশিন প্রস্তুত করেছেন। আগামী সপ্তাহ থেকে আমন ধানের জমি প্রস্তুত এবং রোপন শুরু করবেন।

 

তিনি আরও বলেন, তার নিজের ১৩ বিঘা জমি ছাড়াও অন্যের জমিতে প্রতি ঘন্টায় ১০০ টাকায় পানি সরবরাহ করবেন।

 

উপজেলার বেশিরভাগ কৃষক এখন বাধ্য হয়ে বৈদ্যুতিক পাম্প ও শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচের মাধ্যমে ধান রোপণের চিন্তা করছেন। সেচ দিয়ে ধান লাগানোর ফলে আমন উৎপাদনের খরচ বেড়ে যাবে বলেও কৃষকরা বলছেন।

 

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭.১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। জেলায় চলতি মাসে ১৭.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় বিগত বছরে ১৫৫ থেকে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। যা অন্য বছরের তুলনায় এবছর অনেক কম। তবে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে বৃষ্টি শুরু হয়ে তা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

বিষয়টি নিয়ে কথা বললে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. সোহানুর রহমান বলেন, সাধারণত আষাঢ় মাসের ২০ থেকে শুরু করে শ্রাবণ মাসের শেষ পর্যন্ত রোপা আমন চাষাবাদ করা হয়। অনাবৃষ্টি ও অতিরিক্ত খরার কারণে কৃষকদের সামান্য অসুবিধা হলেও তেমন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন মোটা ধানের জন্য একটু অসুবিধা হলেও চিকন জাতের ধান একটু দেরিতে রোপন করলেও তেমন ক্ষতি হবেনা। এখনও সময় আছে যদি দুই এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টিপাত না হয়, তবে প্রয়োজনে গভীর নলকূপ গুলো চালু করার জন্য বলা হবে।

 

Facebook Comments Box

Posted ৪:৪৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৬ জুলাই ২০২২

Desh24.news |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
এম আজাদ হোসেন সম্পাদক ও প্রকাশক
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয়

শ্রীসদাস লেন,বাংলাবাজার , ঢাকা-১১০০/ ঘিওর, মানিকগঞ্জ।

হেল্প লাইনঃ +৮৮০১৯১১৪৭৭১৪১/০১৯১১২২৭৯০৭

E-mail: infodesh24@gmail.com