ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট ২০২১ | প্রিন্ট
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী কয়লা খনি বিরোধী অন্দোলনের স্মরণীয় দিন হিসেবে আজ ২৬ আগস্ট বহস্পতিবার স্থানীয়ভাবে শােক দিবস পালিত হচ্ছে। গণ আদালনন্দোলনের ১৫বছর পদার্পন করলেও আজও বাস্তবায়ন হয়নি সেই সময়ের ৬ দফা চুক্তি।
২০০৬ সালর ২৬শে আগস্টের এই দিনে
তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ফুলবাড়ী শাখার আহব্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল জানান,
উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লা খনি বাস্তবায়নে প্রস্তাবকারি এশিয়া এনার্জি নামক একটি বহুজাতিক কাম্পানী। ২০০৬ সালের ২৬ আগষ্টে এই দিনে আন্দোলনকারীরা তাদের ফুলবাড়ী অফিস ঘেরাও কর্মসুচি পালন করতে গেলে, ওই দিন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইন শৃখলা বাহিনী গণমিছিলের উপর টিয়ারশেল ও গুলিবর্ষন করে। গুলিতে ঘটনাস্থলে নিহত হয় সুজাপুর চাঁদপাড়া গ্রামর মকলছুর রহমানের ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র তরিকুল ইসলাম (২০), বারোকোনা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে আমিন (১৫) ও উত্তর সাহাবাজপুর গ্রামের সালেকিন (১৭)। একই ঘটনায় দক্ষিণ সাহাবাজপুর গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র, রতনপুর গ্রামের শ্রীমান বাস্কে, সুজাপুর গ্রামের বাবলু রায়সহ চিরতরে পঙ্গু হয়।এতে প্রায় ৩ শতাধিক মানুষ আহত হয়। এরপর ফুলবাড়ীর মানুষ গণ আদালন গড়ে তোলে। ফুলবাড়ীর উপর দিয়ে বাস, ট্রেনসহ সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় আন্দলোন কারীরা । সারা দশের সাথে কয়েকদিন ফুলবাড়ীর যোগাযোগ বিছিন্ন থাকে। ফুলবাড়ীর মানুষের গণ আন্দোলনের মুখে ৩০শে আগষ্ট তৎকালিন সরকারের একটি প্রতিনিধি দল ফুলবাড়ীবাসীর সাথে একটি বৈঠক করেন ৬ দফা সমোঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তির ১৫ বছর পেরিয়ে ১৬ বছরে পদার্পন করলেও বাস্তবায়ন হয়নি ৬ দফা চুক্তি।
দিবসটি যথাযথ ভাবে পালনের লক্ষে ফুলবাড়ীর বিভিন্ন অরাজনৈতিক পেশাজীবী সংগঠন,সম্মিলিত পেশাজীবি সংগঠন ও তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি পৃথক পৃথক ভাবে ফুলবাড়ীতে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে কালো ব্যাচ ধারণ, গণ জমায়েত, শোক র্যালী, স্মতিম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পন, আলাচনা সভা, প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি প্রদান, মিলাদ মাহফিল ও প্রার্থনা।
ফুলবাড়ীর মানুষ মনে করেন সেদিন যে গণ বিজয় অর্জিত হয়ছিল তা শুধু ফুলবাড়ীবাসীর নয়, এ বিজয় সারা দেশবাসীর জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। অত্র এলাকায় স্থায়ী সম্পদ ধংস করে ও লাখ লাখ মানুষর অস্তিত্ব বিপন করে কয়লা খনি প্রকল্প চালু হলে পথে বসতে হবে হাজার হাজার পরিবারকে। কারণ দিনাজপুর জেলার মানুষ ধান, চাল, চিড়া, লিচু প্রভতি উৎপাদন অভিজ্ঞ ও অভ্যস্থ। মাঠ ঘাটে খটে খাওয়া এসব মানুষ ক্ষতিপূরণের অর্থ দিয়ে তা ভাঙ্গিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকলে এক সময় তাদেরকে পথে বসতে হবে। কারণ অর্থ থাকলে তা দিয়ে সম্পদ কেনা কিংবা ব্যবসা বাণিজ্য করা সহজ সম্ভব হয়ে উঠে না, তাই মানুষের মনে আশংকা তথা কথিত ফুলবাড়ী কয়লা খনি বাস্তবায়ন হলে কৃষক হারাবে ৩ ফসলি কৃষি জমি, ব্যবসায়ী হারাবে ব্যবসা বাণিজ্য, শ্রমিক হয়ে পড়বে বেকার ও কর্মহীন, ছাত্র-ছাত্রী হারাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জনগণ হব দিশেহারা । ফুলবাড়ীবাসীর প্রাণের দাবী “স্থায়ী সম্পদ ধংস করে ফুলবাড়ীতে কয়লা খনি চাই না” এই শ্লাোগানকে সামনে রেখে বিভিন্ন অরাজনৈতিক পেশাজীবী সংগঠন ও ফুলবাড়ীবাসী সম্মিলিত ভাবে ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ী শাোক দিবস উদ্যাযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে প্রতি বছর এই দিনে দিবসটি পালন করেন এবং ৬ দফা বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবি আদায়ে সাচ্চার ।
Posted ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট ২০২১
Desh24.news | Azad
.