অনলাইন ডেস্ক | বৃহস্পতিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | প্রিন্ট
নামাজ আদায়, ইসলামি গবেষণা, সংস্কৃতি ও জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে মসজিদ ব্যবহার করা মুসলিমদের ঐতিহ্য। যদিও আগের সে ঐতিহ্য এখন আর নেই। মসজিদগুলো এখন ব্যবহার হয় শুধু নামাজের জন্যই।
হারিয়ে যাওয়া সে ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এবার দেশের প্রতি জেলা ও উপজেলায় দৃষ্টিনন্দন ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণে করছে সরকার। এর মধ্যে মুজিববর্ষে ১৭০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হবে।
জানা গেছে, বিশ্বে এই প্রথম কোনো সরকার একসঙ্গে ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণ করছে।
রংপুর, সিরাজগঞ্জ ও গাইবান্ধা জেলায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দ্রুত গড়ে উঠছে এসব মডেল মসজিদ। সিরাজগঞ্জ ও রংপুর জেলায় ৯০ শতাংশ নির্মাণকাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
২০১৪ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে এ মসজিদগুলো নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। এর প্রাথমিক পরিকল্পনা করেন স্বয়ং দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার গঠনের পর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতি কেন্দ্র স্থাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প ৮ হাজার ৭২২ কেটি টাকা ব্যয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়।
সেই ধারাবাহিকতায় অনুমোদিত প্রকল্পের নকশা অনুযায়ী জেলা পর্যায়ে ৪ তলা ও উপজেলার জন্য ৩ তলা এবং উপকূলীয় এলাকায় ৪ তলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এসব মসজিদ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন হচ্ছে।
তিন ক্যাটাগরিতে নির্মিত হচ্ছে মসজিদগুলো। জেলা শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬৯টি চারতলা মডেল মসজিদ থাকছে এ-ক্যাটাগরিতে। এগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন ২৩৬০ বর্গমিটার। ১৬৮০ বর্গমিটার আয়তনের বি-ক্যাটাগরির ৪৭৫টি মসজিদ হচ্ছে উপজেলাগুলোয়। ২০৫২ বর্গমিটার আয়তনের সি-ক্যাটাগরির মসজিদ হবে ১৬টি উপকূলীয় এলাকায়।
জেলাসদর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় নির্মাণাধীন মসজিদগুলোতে একসঙ্গে ১২০০ মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারবে। উপজেলা ও উপকূলীয় এলাকার মডেল মসজিদগুলোতে নামাজ করতে পারবে ৯০০ জন।
প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. নজিবর রহমান জানান, ‘মুজিববর্ষে ১৭০টি মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হবে। আগামী এপ্রিলে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেপ্টেম্বরে ৬০টি এবং মুজিববর্ষের শেষভাগে ডিসেম্বরে আরও ৬০টি মসজিদ উদ্বোধন করা হবে।থ
প্রকল্পের মোট কাজের ৩২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে নজিবর রহমান বলেন, ‘আগামী দুই বছরের মধ্যে সবগুলোর নির্মাণ সম্পন্ন হবে।থ
নজিবর রহমান আরও বলেন, ৫৬০টি মডেল মসজিদে সারাদেশে প্রতিদিন ৪ লাখ ৯৪ হাজার ২০০ পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪০০ নারী নামাজ আদায় করতে পারবেন। এসব মসজিদে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি জ্ঞান অর্জন ও গবেষণার সুযোগ থাকবে।
মডেল মসজিদ প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সে পাঠাগার, গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, পবিত্র কোরআন হেফজ বিভাগ, শিশুশিক্ষা, অতিথিশালা, পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজ্জযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, অটিজম কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র থাকবে।
এ ছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা এবং গাড়ি পার্কিং সুবিধা রাখা হয়েছে। মসজিদগুলোতে দ্বীনি দাওয়াত কার্যক্রম ও ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি মাদক, সন্ত্রাস, যৌতুক, নারীর প্রতি সহিংসতাসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা রোধে সচেতনতা কার্যক্রমও পরিচালনা করা হবে।
Posted ৫:৫৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১
Desh24.news | Azad
.