মোঃ শফি আলম, ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি | শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১ | প্রিন্ট
চলতি বছর মিষ্টি কুমড়া চাষ করে মানিকগঞ্জের ঘিওরের প্রায় শতাধিক কৃষকরা লোকসানের মুখে পরেছে। অথচ মিষ্টি কুমড়া চাষে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা বিগত ৫/৬ বছরে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তাদের সাফল্য দেখে এখানে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে মিষ্টি কুমড়ার চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক চাষি অন্যান্য ফসলের (সাথি ফসল) সাথে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেন। তাদের সংসারে এসেছিল স্বচ্ছলতা। অল্প সময়, স্বল্প খরচ আর ভাল ফলনে ওই অঞ্চলের কৃষকরা ছিল খুশি। কিন্তু করোনা আর লকডাউনের প্রভাবে মিষ্টি কুমড়ার দর নেমে এসেছে ৪/৫ টাকা কেজি দরে। ফলে লাভের মুখ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচ উঠা নিয়েই শংকিত কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ঘিওরে প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে। কৃষকরা কার্তিক-অগ্রাহায়ন মাসে আলু ও ফুলকপির চাষ করে। একই জমিতেই মাসের মাঝামাঝি সময়ে মিষ্টি কুমড়ার বীজ বপন করে। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মিষ্টি কুমড়ার ফলন পাওয়া যায়।
সরজমিন দেখা গেছে, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কমবেশি মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে। তবে বালিয়াখোড়া, চঙ্গশিমুলিয়া, মাইলাগি, বড়বিলা, নীলা, বাঙ্গালা, বরুরিয়া, পয়লা, কুইষ্টা গ্রামে উল্লেখযোগ্য হারে কুমড়ার আবাদ হয়।
এখানকার উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া মানিকগঞ্জ কাঁচা বাজার আড়ত, আশুলিয়ার বাইপাইল সবজী আড়ত ও রাজধানীর কাওরান বাজারে পাইকারী দরে বিক্রি করছেন কৃষকরা।
গত বছরের তুলনায় এবছর মিষ্টি কুমড়ার আবাধ হয়েছে বেশি। কৃষি জমির ৮০ শতাংশ জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেছেন উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের পুরাণ গ্রামের কৃষক আব্দুল করিম ও তার ভাই মোঃ বজলু মিয়া তিনি জানান, কুমড়া চাষে জমিতে বিঘাপ্রতি খরচ প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। কিন্তু এবছর করোনার কারনে মিষ্টি কুমড়ার দাম কম হওয়ায় লাভের অংশ কম।
বালিয়াখোড়া গ্রামের সোনা মিয়া জানান, এক বিঘা জমি থেকে সবোচ্র্চ ৮শ’ থেকে ১ হাজার কুমড়া পাওয়া যায়। গত বছর কুমড়ার দাম আকার ভেদে ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা দরে ক্ষেত থেকেই পাইকারী ব্যবসায়ীরা কনে নিয়ে গেছে। আমাদের বাড়তি কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়না। কিন্তু করোনা আর লকডাউনের প্রভাবে এবার মিষ্টি কুমড়ার দাম কম ৪ টাকা থেকে ৬ টাকা কেজি। এ যাবত কুমড়া বিক্রি করা হয়েছে ১১ হাজার টাকা। খরচ উঠাতে পারবো কিনা তা নিয়ে চিন্তায় আছি।
পাইকারী ক্রেতা সিংজুরি ইউনিয়নের কামারজাগি গ্রামের কান্দু বেপারী ও বালিয়াখোড়া এলাকার রতন মিয়া জানান, অন্যান্য এলাকার চেয়ে এখানকার উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া সুস্বাদু ও আকৃতিতে বড় হয় বলে চাহিদা বেশি। এবছর আমরা ৩ লক্ষ টাকার মিষ্টি কুমড়া পাইকারী ক্রয় করেছি। গত বছরের চেয়ে এবছর কুমড়ার দাম তুলনামুলক কম। লাভের আশা খুব একটা করা যাবে না।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবীদ শেখ বিপুল হোসেন জানান, কৃষকরা ফুলকপি, আলু, চাষের সঙ্গে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করছে। কম খরচে ভালো লাভ পাচ্ছেন। তাই দিন দিন এখানকার কৃষকরা মিষ্টি কুমড়া আবাদে ঝঁুকে পরছে। এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
Posted ৩:০১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১
Desh24.news | Azad
.
.