দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি | শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২১ | প্রিন্ট
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক হৃদরোগী ও তার ছেলে করোনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মচারীদের তোপের মুখে পড়লে তাদের তিন ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অবশেষে পিতা পুত্রকে মোবাইল কোর্টে সাজা দেবার প্রস্তুতি নেবার সময় প্রত্যক্ষদর্শীদের তোপের মুখে করোনা পরীক্ষার স্যাম্পল না নিয়েই পিতা-পুত্রকে বিদায় করে দেয়া হয়।
ভুক্তভোগী উপজেলার সোনাইকুন্ডি গ্রামের কৃষক তহিদুল ইসলাম সম্প্রতি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ্য বোধ করায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাবার সিদ্ধান্ত নেন। গত কয়েকদিন ধরে করোনা নেগেটিভ সনদ নেবার জন্য দৌলতপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলে বৃহস্পতিবার হাসপাতালে আসতে বলা হয়। বেলা ১১ টার দিকে তহিদুল ইসলাম তার ছেলে সোহেল রানাকে সাথে নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন। এসে প্রয়োজনীয় ফরম পুরণ করছিলেন। এসময় আচমকা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিসংখ্যানবিদ আমিরুল ইসলাম তাদের ফরমটি কেড়ে নিলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম তুহিন সেখানে উপস্থিত হয়ে করোনা পরীক্ষা করতে আসা পিতাপুত্র কে কথা কাটাকাটি করার অপরাধ দেখিয়ে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। এবং তাদের মোবাইল কোর্টে সাজা দেবার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডাকা হয়। ঘটনাস্থলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত হলে প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতার সাথে কথা বলে অবরুদ্ধ পিতাপুত্রের কোন দোষ না পাওয়ায় ইউএনও ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বাস্থ্যকপ্লেক্সের ষ্টাফদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং অবরুদ্ধ পিতাপুত্র কে মুক্ত করে দেন।
এ ব্যাপারে হৃদরোগী কৃষক তহিদুল ইসলাম জানান, তিনি অসুস্থ। কোন অন্যায় না করেও করোনা পরীক্ষা করতে গিয়ে আমাকে ও আমার ছেলেকে একটি ঘরের মধ্যে তিন ঘন্টা আসামীর মত আটকিয়ে রাখা হয়েছিল যেন আমরা চুরি ডাকাতি করেছি।
প্রত্যক্ষদর্শী জাহেরুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও সহ ষ্টাফরা সাধারণ রোগীদের সাথে সব সময় খারাপ আচরণ করে থাকেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম তুহিনদাবী করেন করোনা স্যাম্পল নেবার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তারা উপস্থিত হননি । এবং কর্মচারীদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। তবে, তাদের তিন ঘন্টা ধরে অবরুদ্ধ রাখা হলে কেন এ বিষয়ে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় সেখান থেকে চলে আসি।
Posted ৪:৩২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২১
Desh24.news | Azad
.