মোঃ শফি আলম, ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি | শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল ২০২১ | প্রিন্ট
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোঃ আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের অধীনে সরকারী ঘর দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন জনের নিকট থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী কেউ লাখ টাকার বিনিময়ে ঘর পেয়েছেন আবার কেউ কেউ টাকা দিয়েও ঘর পাচ্ছে না। নিজেকে ক্ষমতাসীন দলের বড় নেতা দাবী করে মানুষজনের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে গরীবের ঘাম ঝরানো অর্থ পকেটবন্দি করেছেন এই ইউপি সদস্য আইয়ুব খান। দীর্ঘদিন পার হলেও ঘর ও টাকা ফেরত না দেয়ায় ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এদিকে অভিযোগ করার কারনে ভুক্তভোগীদের বাড়ি গিয়ে আইয়ুব খান বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে জানান তারা ।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বানিয়াজুরি ইউনিয়নের কুন্দুরাবাড়ী মোঃ ইকবাল হোসেন প্রায় এক থেকে দেড় বছর আগে ৩ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ আইয়ুব খান প্রধানমন্ত্রীর উপহার একটি পাকা ঘর দেয়ার কথা বলে। আমি ব্যাংকে জমি মরগেছ রেখে এক লক্ষ টাকা উঠাই তার মধ্য থেকে ৭০ হাজার টাকা ঘর বাবদ দেই। দীর্ঘ এক বছর পার হলেও কোন ঘর দিতে পারেনি ইউপি সদস্য। আর টাকা ফেরত চাইলে ঘর পাবে বলে নানান তালবাহানা করে ঘোরাতে থাকে। আমি স্ত্রী,সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। পরে নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
আরেক ভুক্তভোগী বানিয়াজুরী এলাকার রিকশা চালক জাহিদ হোসেন ধারদেনা ও বাড়ির গরু বিক্রি করে মোট এক লাখ টাকা ইউপি সদস্য আইয়ুব খানের কাছে ঘর বাবদ দিয়েছেন। ঘর পেয়েছেন ঠিকই কিন্ত সে জানে না ঘর পেতে কোন টাকা পয়সা লাগে না। এ কথা শোনার পর রিকসা চালকের মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতো। শরীরের ঘাম ঝড়ানো অর্থ দিয়ে সরকারী ঘর পেয়েছেন তা মেনে নিতে পারছেন না।
জাহিদ হোসেন বলেন, প্রথমে ৭০ হাজার টাকা মেম্বার আমার কাছ থেকে নিয়েছে। এরপর বিভিন্ন কায়দায় আরো ৩০ হাজার টাকা নিয়ে আমাকে কোন রকম একটি ঘর দিয়েছে। কিন্ত ঘরটি একবছর যেতে না যেতেই ধ্বসে পরার উপক্রম দেখা দিয়েছে।
ভুক্তভূগী কৃষক ইকবাল ও রিকসা চালক জাহিদ হোসেন ছাড়াও আরো কয়েক জন রাসেল,দাগা,মামুন,নারান ঘোষের কাছ থেকে ঘর দেয়ার কথা বলে ইউপি সদস্য আইয়ুব খান টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী জানিয়েছেন ঘর দেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকা আইয়ুব খান নিয়েছিল। এক বছর ঘুরানোর পর ঘর না দিয়ে টাকা ফেরত দিয়েছে। এছাড়া রাথুরা গ্রামের বিদেশ প্রবাসী রাসেল ৭০ হাজার টাকার বিনিমিয়ে তার মায়ের নামে একটি পাকা ঘর পেয়েছে বলে ভুক্তভোগী ইকবাল হোসেন জানান।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মোঃ আইয়ুব খান টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, তিনি সরকারী ঘরের কথা বলে কারও কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেয়নি। সব ঘর চেয়ারম্যান দিয়েছেন। আমি কোন ঘর কাউকে দেইনি। এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। আসলে আমার পেছনে শত্রু লেগেছে। কারন আমি ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারন সম্পাদক থেকে পদত্যাগ করে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক পার্থী
হওয়ার ঘোষনা দিলে আমার দলের ভেতর থেকেই শত্রু তৈরি হয়েছে।
ঘিওর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে অনেক সময়ই অনেকেই আমার কাছে নানান অভিযোগের কথা জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আইরিন আক্তার জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানকে অবগত করা হয়েছে এবং অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
Posted ৭:৩৩ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল ২০২১
Desh24.news | Azad
.
.
আর্কাইভ
রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র | শনি |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | |||
৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ |
১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ |
১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ |
২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |