মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : | বুধবার, ০৫ অক্টোবর ২০২২ | প্রিন্ট
মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে বিভিন্ন সময়ে ১২ কোটি টাকা মূল্যমানের সরকারি খাস জমি উদ্ধার করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান। এতে ভূমিদস্য হিসেবে চিহ্নিত একটি বিশেষ মহলের স্বার্থে টান পরে। সরকারি জমি দখল বাণিজ্য করতে না পেরে সেই মহল এখন উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধাচারণ ও নানা মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে চলছেন।
এসব হয়রানিমূলক অভিযোগ ও তথ্য বিভ্রান্তকর সংবাদ প্রকাশ করে জনবান্ধব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বেকায়দায় ফেলতে উঠে পড়ে লেগেছেন, এমন অভিযোগ উঠেছে ওই প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। চলতি বছর জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নির্বাচিত হন ইমরুল হাসান।
দৌলতপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরুল হাসানের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যার হাস্যকর অভিযোগ এলাকাবাসীর মনে দেখা দিয়েছে নানা প্রতিক্রিয়া। ২ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর সালাউদ্দিন ঠান্ডু নামের এক ব্যক্তি দেড় বছর আগের ঘটনা উল্লেখ করে, তার ভাইকে পিটিয়ে হত্যার এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ইউএনও’র বিরুদ্ধে ।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ২০২১ সালের ৬ই জুলাই দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা ইউনিয়নের বাচামারা বাজারে অভিযান চলাকালে তার ভাইকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন ইউএনও। সালাউদ্দিন ঠান্ডুর ভাই আবু জাফর গত চলতি বছরের ১৬ই মে মারা যায়।
এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আবু জাফর দীর্ঘদিন গ্যাস্ট্রোলজি সমস্যায় ভূগতেছিলেন এবং এই রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
গতকাল বুধবার সরজমিন ঘটনাস্থল বাচামারা বাজারে গিয়ে জানা গেল ভিন্ন বিষয়। স্থানীয় কয়েকজন দোকানদার ও বাসিন্দাদের সাথে কথা বললে তারা জানান, আবু জাফরের পেটে গ্যাস জমে পেট ফুলে যাওয়ার কারণে গত ১৫ মে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অবস্থার অবনতি হলে পরদিন ১৬ মে সকাল সাড়ে ১১ টায় আবু জাফর ওরফে নফর আলী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
সে সময় আবু জাফর এর ভাই সালাউদ্দিন ঠান্ডু তার ফেসবুক আইডিতে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্যাস্ট্রোলোজি সমস্যার কারণে মৃত্যুর বিষয়টি শেয়ার করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, আবু জাফর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাড়িতে মারা যান। যা একেবারেই সত্য নয়।
এ বিষয়ে বাচামারা ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরুল হাসানের মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে আমি উপস্থিত ছিলাম। ওই সময়ে মৃত আবু জাফরকে ইউএনও কর্তৃক পিটিয়ে আহত করার যে অভিযোগ তার ভাই সালাউদ্দিন ঠান্ডু করেছেন এর কোন সত্যতা বা ভিত্তি নেই। এরকম কোন ঘটনাও ঘটেনি।
ঘটনার বিষয়ে ওই সময়ে ইউএনওর গানম্যান মোঃ আঙ্গুর হোসেন জানান, আমি ইউএনও স্যারের সাথেই ছিলাম। ওই দিন মোবাইল কোর্ট চলাকালীন কাউকে কোন মারধর বা পিটুনির ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরুল হাসান বলেন, ২০২১ সালের জুলাই মাসে করোনার থাবায় গোটা দেশ আক্রান্ত, সংক্রমণ রোধে ঔষধ এবং জরুরি কিছু পরিসেবা ছাড়া অন্যান্য কোন দোকান-পাট রাত ৮টার পর বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশনা জারি হয়। সরকারী আইন বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় বাচামারা বাজারে অভিযান পরিচালনা করি। দৌলতপুর থানা পুলিশসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সাথে ছিলেন। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে রাত ১০ টার দিকে অনেকগুলো দোকান খোলা দেখি। মোবাইল কোর্টের রায়ে অর্থদণ্ড আরোপ করলে কয়েকটি দোকান জরিমানার অর্থ প্রদান করে। তখন কোন ব্যবসায়ীকে পেটানোর ঘটনা একদিকে যেমন হাস্যকর, অপরদিকে ভিত্তিহীন ও অসত্য।
ইউএনও আরো বলেন, মূলত আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য প্রায় ১০-১২ কোটি টাকার খাস জমি উদ্ধার করি, এতে দৌলতপুর উপজেলার একটি বিশেষ মহলের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। এরই প্রেক্ষিতে বানোয়াট ও মিথ্যা অভিযোগ সম্বলিত দরখাস্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা শুরু করে।
Posted ৫:৫১ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৫ অক্টোবর ২০২২
Desh24.news | Azad
.