দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: | রবিবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা ভোগীর প্রায় আড়াই কোটি টাকা গায়েবের কোন সন্ধান মেলেনি। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের প্রেরিত অভিযোগ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হবার পর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সমাধানের আশ্বাস দিলেও শুধুমাত্র অভিযোগকারী কিছু ভাতাভোগী ২/১ জনকে সাড়ে ৪ হাজার টাকার স্থলে ১ হাজার করে টাকা দিয়ে অজ্ঞাত কারণে সিংহভাগ ভাতাভোগীদের বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। এদিকে বিগত সালে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক এর এনফোর্সমেন্ট কমিটি কর্তৃক গৃহীত অভিযোগ তদন্ত কালে এই দুর্নীতির হোতা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কে সতর্ক করা হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র জানিয়েছে। পরে ২৩ সালের ২৮জানুয়ারী ভূক্তভোগিরা ঘটনার সুরাহা চেয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব ও গনভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। অবস্থানকালে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে তারা নিজ উপজেলায় ফিরে আসেন। তারই ধারাবাহিকতায় ৫ ফেব্রæয়ারী উপজেলা সমাজসেবা অফিসে সরেজমিনে তদন্তে আসেন সামজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেবব্রত দাস, সামজসেবা অধিদপ্তরের সমাজসেবা অফিসার রায়হান কবীর ও বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক সমির মল্লিক।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ২০২০/২০২১ অর্থবছরে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে নতুন করে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধি ও দলিত হরিজন ভাতা প্রাপ্ত হিসাবে নিবন্ধিত হন। এজন্য ২০২১ সালের জুন মাসে তাদের মোবাইল ব্যাংকে সরাসরি টাকা প্রেরণের জন্য এম,আই,এস সম্পন্ন হয়। কিন্তু নিবন্ধিত হওয়ার পর থেকে কেউ তিন মাস কেউ ছয় মাস কেও আবার এক বছরের ভাতা পায়নি তাদের দেয়া মোবাইল নম্বরে। এ ব্যাপারে ভূক্তভোগিরা সমাজসেবা অফিসে খোঁজ নিলে জানানো হয় তাদের টাকা অন্য নাম্বারে টাকা চলে গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সেসময় নতুন ভাতাভোগীদের এম,আই,এস সম্পন্ন করেছিল সমাজসেবা কর্মকর্তা আতাউর রহমান, তার কার্যালয়ের সুপারভাইজার তরিকুল ইসলাম, মশিউর রহমান এবং সংসদ সদস্যের নিয়োগকৃত প্রতিনিধি টিপু নেওয়াজ।
ভাতাভোগীরা জানিয়েছেন সমাজসেবা অফিসের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারী ও সংসদ সদস্যের নিয়োগকৃত প্রতিনিধি টিপু নেওয়াজ এর যোগসাজসে আমাদের মোবাইল নাম্বার আপলোড না করে তাদের নিয়ন্ত্রিত মোবাইল নাম্বার আপলোড করে সমুদয় টাকা তুলে নিয়েছেন। হোগলবাড়িয়া ইউপির চরদিয়াড় গ্রামের ভাতাভোগী ৮০ বছরের বৃদ্ধ হোসেন মন্ডল, ইন্তাদুল, মাজু ও রাহেদ ঘোষ, প্রতিবন্ধী শাকিল ও মাহাতাব বলেন, এম,আই,এস সিস্টেম হবার পর তারা সহ এই ইউনিয়নের প্রায় ৭ শতাধিক ভাতাভোগী ঠিকভাবে টাকা পাননি।
উল্লেখ্য যে, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আতাউর রহমান দৌলতপুর আসনের সাংসদ সরওয়ার জাহান বাদশা‘র নিয়োগকৃত প্রতিনিধি টিপু নেওয়াজের আত্মীয় হিসাবে এমপি সাহেবের তদ্বিরে তিনি সমাজসেবা অধিদপ্তরের গত ৭জানুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে ৪১,০১,০০০০,০০৮,১৯,০০৫,১২,১৫ স্মারকের আদেশে দৌলতপুরে বদলী হয়ে আসেন।
এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য সরওয়ার জাহান বাদশা‘র সেল ফোনে বারবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি টিপু নেওয়াজের নিকট জানতে চাওয়া হলে এমপি সাহেবের প্রতিনিধি হিসাবে ভাতাভোগীদের সহায়তা করেন শুধু, তা ব্যাতিত অন্য কিছু জানেন না বলে জানান তিনি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আতাউর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ন অস্বীকার করেন। এবং তিনি আরোও বলেন, আমি রাজনৈতিক গেমের বলি হয়েছি বলে জানায়।
Posted ৫:৪০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
Desh24.news | Azad
.