আব্দুর রাজ্জাক মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি | শনিবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট
রাত পোহালেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নানা ঘটনা আর পট পরিবর্তনে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে ভোটের মাঠে।
মর্যাদাপূর্ণ মানিকগঞ্জ-১ আসনে মহাজোটের প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী জহিরুল আলম রুবেলের সঙ্গে লড়াই হবে ঈগল প্রতীকের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদের। নির্বাচনী আসনের তিন উপজেলার কমপক্ষে শতাধিক ভোটারদের সাথে কথা বলে এমনটা আভাস পাওয়া গেছে।
মানিকগঞ্জে সংসদীয় আসন সংখ্যা তিনটি। এরমধ্যে মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয়) আসন জাতীয় পার্টিকে (জাপা) ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ আসনে আরও দুই প্রার্থী ভোটের মাঠে লড়ছেন- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) এর মোনায়েম খান (নোঙ্গর), গণফ্রন্টের প্রার্থী মো. শাহজাহান খান (মাছ) প্রতীক।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন মাহমুদ মাঠ গরম করে রেখেছেন। রয়েছেন শক্তিশালী অবস্থাানে। ফলে সমঝোতায় পাওয়া জাপার প্রার্থী রয়েছেন বেশ অস্বস্তিতে। অন্যদিকে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী প্রত্যাহার হওয়ায় দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা নেমে এসেছে। দ্বিধাবিভক্ত দেখা দিয়েছে দলীয় নেতা কর্মীদের মাঝে।
স্থাানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহার হওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জাপার প্রার্থীর জন্য কাজ করেছেন। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তও হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি কাজ করছেন। তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।
২০১৪ ও ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এ এম নাঈমুর রহমান দূর্জয়। এবার এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম। তবে ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে জাপার প্রার্থী মো. জহিরুল আলম রুবেলকে ছেড়ে দেয়। তিনি জাপার সভাপতিম-লীর সদস্য। দ্বৈত প্রার্থী জহিরুল আলম মানিকগঞ্জ-৩ আসনের জাপার প্রার্থী হিসেবেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ আসনে মোট ভোটর সংখ্যা ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৯৯৭ জন। পুরুষ ভোটার ২,১৯,৪৯১, নারী ভোটার ২,১৭,৫০৪ এবং হিজড়া ভোটার ২ জন। ভোট কেন্দ্র ১৮০ টি।
জহিরুল আলম বলেন, এ আসনটি আমার জন্য নতুন হওয়ায় সেখানে কাজ গোছাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। মাঠে দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণ আমার সাথে আছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন মাহমুদ মানিকগঞ্জ-১ আসনে নির্বাচনী মাঠে ঈগল প্রতীক নিয়ে শক্ত অবস্থাানে রয়েছেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।
২০১৪ সাল থেকে তিনি এই আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আসছেন। নির্বাচনী এলাকার প্রত্যন্ত এলাকায় ভোটারদের কাছে তিনি বেশ জনপ্রিয়।
সালাউদ্দিন মাহমুদ বলেন, দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ নেই। দলের অনেক নেতা-কর্মী আমার সাথে আছেন। ভোটারদেরও সরব সমর্থন ও ভালবাসা আছে। তিনি আরো বলেন, আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী। আমি সাধারন জনগনের প্রার্থী। সারা জীবন নেত্রীর আদেশ পালন করে আসছি। তার আদেশেই প্রার্থী হয়েছি।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও ছেড়ে দেওয়া প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তেই তাকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হয়েছে। দলের প্রতি আনুগত্য ও শ্রদ্ধায় তা মেনে নিয়েছি। যেহেতু দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহার করে জাপাকে আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন, তাই দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জোটের (জাপা) প্রার্থীর জন্য কাজ করার নির্দেশনা রয়েছে।
ঘিওর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুর রহমান আলাই এবং দৌলতপুর উপজেলা সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস বলেন, জোটের (জাপা) প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলের নির্দেশনার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য রেজাউর রহমান দর্জী জানু বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে কোন বাঁধা নেই। সালাউদ্দিন দলের হাই কমান্ডের নেতৃবৃন্দের অনুমতি নিয়েই নির্বাচন করছেন।
ঘিওর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, সালাউদ্দিন মাহমুদ আওয়ামী লীগের একজন পরীক্ষিত নেতা। তিনি দীর্ঘদিন যাবত এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন। বিপুল ভোটের ব্যবধানে তিনি এমপি নির্বাচিত হবেন।
Posted ৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৪
Desh24.news | Azad
.