
ডেস্ক রিপোর্ট | রবিবার, ০১ আগস্ট ২০২১ | প্রিন্ট
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে দাবানলে প্রাণ গেছে দুই বনকর্মীসহ কমপক্ষে ছয়জনের। দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে ৯৮টি এলাকায়। এর মধ্যে শনিবার পর্যন্ত চার দিনে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে ৮৮টি এলাকার আগুন। দুর্গত অঞ্চলগুলোতে জারি করা হয়েছে জরুরি দুর্যোগ অবস্থা।
অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত কীভাবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী দুই পর্যটন শহর মানাভগাতে পাঁচজন ও মারমারিসে একজনের মৃত্যু হয়েছে আগুনে। অগ্নিকাণ্ডের সময় মানাভগাতে দগ্ধ ও আহত ৪০০ মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখনও ১০ জন চিকিৎসাধীন। মারমারিসে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৬০ জন।
এ দাবানল শুরু হয় বুধবার থেকে। তীব্র বাতাস ও সূর্যের প্রখর তাপে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন। পুড়ে ছাই হয় বেশ কয়েকটি গ্রাম ও পর্যটনকেন্দ্র। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয় গ্রামের কয়েক শ বাসিন্দা ও অতিথিকে।
আজিয়ান সাগর তীরবর্তী বডরামে হোটেলে ওঠা অতিথিদের নৌকা ও প্রমোদতরীতে করে সাগরপথে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়।
দক্ষিণের হাতায় প্রদেশ থেকে নতুন করে শুরু হওয়া দাবানল ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। এসব এলাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানানো হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান হেলিকপ্টারে চড়ে শনিবার দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেন।
সে সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে তিনি এলাকাগুলোকে ‘দুর্যোগগ্রস্তথ আখ্যা দেন। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।
পরে মানাভগাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এরদোয়ান বলেন, ‘দাবানলের এ ঘটনাকে রাজনৈতিক দৃষ্টি থেকে আঙ্কারা দেখছে না। কিন্তু তাও ইচ্ছে করে আগুন লাগানো হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।থ
এর আগে বেশ কিছু দাবানল তুরস্কে নিষিদ্ধঘোষিত কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠীর লাগানো আগুন থেকে শুরু হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিল তুরস্কের সরকার।
আগুন নেভাতে কাজ করছে ১৩টি বিমান। ইউক্রেন, রাশিয়া, আজারবাইজান আর ইরানও এতে সহযোগিতা করছে। এ ছাড়া অর্ধশত হেলিকপ্টার, ড্রোন নিয়েও আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দিয়েছেন কয়েক হাজার তুর্কি কর্মকর্তা।
তুরস্কের বন সমিতির তথ্য অনুযায়ী, এক দশকে দেশটিতে প্রতিবছর গড়ে দুই হাজার ৬০০ করে দাবানলের ঘটনা ঘটত। কিন্তু গত বছর এ সংখ্যা তিন হাজার ৪০০তে পৌঁছায়।
আফ্রিকা থেকে বয়ে আসা গরম বাতাসে ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। এর ফলে ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে বৃদ্ধি পাচ্ছে দাবানল।
চলতি সপ্তাহের সোমবার গ্রিসসহ ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে তাপমাত্রা বেড়ে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। তাপমাত্রা স্বাভাবিক হতে লেগে যেতে পারে এক সপ্তাহ।
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যা ও দাবানলসহ নানা দুর্যোগের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Posted ৪:১৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০১ আগস্ট ২০২১
Desh24.news | Azad
.
.