স্টাফ রিপোর্টার | শুক্রবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
মানিকগঞ্জের ঘিওরে উচ্চ বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বাড়িতে চলাচলের পথ বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রভাবশালী প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। গত দুই দিন যাবত ওই পরিবারটি বাড়িতে প্রবেশের পথ অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। ৫ সদস্যের পরিবারটি বিকল্প পথে ঝোপঝাড় মাড়িয়ে চলাচল করছেন।
পথ অবরুদ্ধ করা ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে গত বুধবার রাতে শিক্ষক পংকজ পালের পিতা পরিতোষ কুমার পাল (৭০) ঘিওর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক পংকজ পালের বাড়ি ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে। তিনি উপজেলার তরা রমজান আলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার পিতা পরিতোষ কুমার পাল তেরশ্রী কলেজের হিসাব রক্ষক ছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাহাদুরপুর গ্রামে সরেজমিনে দেখা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষকের বাড়ির প্রবেশ পথে বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচলের পথ আটকে দেয়া হয়েছে। কথা বলার জন্য বিকল্প পথে ঝোপঝাড় মাড়িয়ে তারা বাইরে আসেন।
পরিতোষ কুমার পাল অভিযোগ করেন, ৫ এপ্রিল দুপুরে হঠাৎ করেই বাড়ি থেকে বেড় হওয়ার পথটি বাঁশের বেড়ায় আটকে দেন প্রতিবেশী শ্যামল কুমার পাল, স্বরসতী রাণী পাল ও তার ছেলে চঞ্চল কুমার পাল। বাধা প্রদান করলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং ধারালো দা দিয়ে আমাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। বেড়া টপকে বের হলে হত্যা করা হবে- এমন হুমকি দেওয়ায় তারা প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তারা প্রভাবশালী, অনেক লোকজনের সাথে ওঠাবসা। তাই প্রাণভয়ে আমরা আতংকে আছি।
অভিযুক্ত শ্যামল কুমার পাল ও তার ছেলে চঞ্চল কুমার পাল বলেন, তাদের বাড়ির সামনের ওই জায়গার মালিক আমরা। আমাদের কাগজপত্র আছে। কিন্তু তারা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। আমাদের জমি বুঝিয়ে দেয় না। আমাদের জায়গায় আমরা বেড়া দিয়ে আটকে দিয়েছি। এখন একটা ফয়সালা হবে।
একাধিক গ্রামবাসী জানান, বাহাদুরপুর মৌজার ৮০ ও ৮১সহ মোট ৬টি দাগের দাগের ৮০ শতাংশের জমিটি নিয়ে পূর্ব পুরুষদের ওয়ারিশান ও মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত দ্বন্দ চলে আসছে। উভয় পক্ষই জমির মালিকানা দাবি করছেন। এনিয়ে আদালতে মামলা চলেছে অনেক দিন। সম্প্রতি পরিতোষ পালের পক্ষে এ মামলায় রায় হয়। জমিটি পরিতোষ পাল বংশপরম্পরায় ভোগ করছিলেন। এ নিয়ে স্থানীয় তৃতীয় পক্ষের অদৃশ্য ইন্ধনে এমন ঘোলাটে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
শিক্ষক পংকজ পাল বলেন, বিজ্ঞ আদালতে শ্যামল কুমার পাল ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৪৪ ধারায় মামলা করে, বিজ্ঞ আদালত চলতি বছরের গত ২০ মার্চ আমাদের পক্ষে দেন। তাদের জুলুম ও বাড়াবাড়ির কারনে আমরা সব সময় ভয়ে থাকি। বাড়িতে প্রবেশ করতে হয় ঝোপঝাড় পাড়ি দিয়ে। মূল প্রবেশ পথ আটকে রেখেছে। লজ্জাকর এ অবরুদ্ধ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চাই।
স্থানীয় পয়লা ইউপির ৬নং ওয়ার্ড সদস্য মো: আরশেদ আলী বলেন, ঐ জমির মালিকানা নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। পক্ষদ্বয় এক অপরের নিকটাত্নীয়। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপোষের জন্য একাধিকবার এ নিয়ে বসা হয়েছে কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি।
ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদকে সাথে একাধিকবার মোবাইলে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। ইউপি কার্যালয়ে যেয়েও তাকে পাওয়া যায় নি।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও উভয়পক্ষকে নিয়ে আগামিকাল (শুক্রবার) বসার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে, ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Posted ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৩
Desh24.news | Azad
.
.