ডেস্ক রিপোর্ট | বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২ | প্রিন্ট
এই প্রথমবারের মতো ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশে ‘শিক্ষক দিবস’ পালন করার ঘোষণা করেছে সরকার। দিবসটি পালন করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা এসেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আজ ২৭ অক্টোবর দেশব্যাপী শিক্ষক দিবস উদযাপন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কেন্দ্র থেকে মাঠ পর্যায়ে পর্যন্ত বিভিন্ন উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হবে। দিবসটি সফলভাবে আয়োজনের অংশ হিসেবে সব স্তরের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করে (প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, কলেজ, কারিগরি ও মাদরাসা) বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। অধিদপ্তরের পাঠানো নির্দেশ অনুসরণ করে যথাযথ মর্যাদায় শিক্ষক দিবস উদযাপন করতে হবে।
১৯৯৫ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে থাকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস। এই দিবসটি শিক্ষকদের অবদানকে স্মরণ করার জন্য পালন করা হয়। ইউনেস্কোর মতে, বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পালন করা হয়। বিশ্বের প্রায় ১০০টির মতো দেশ এ দিবসটি পালন করে।
এবারই প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে সারাদেশে শিক্ষক দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দিবসটি উদযাপনে সব জেলা-উপজেলায় র্যালি, আলোচনা সভা, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি এবং স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনগুলোর মাধ্যমে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করতে বলা হয়েছে।
২০২২ সালের শিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- “শিক্ষকদের হাত ধরেই শিক্ষা ব্যবস্থার রূপান্তর শুরু ৷”
এ প্রতিপাদ্যকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী এবার পালন করা হবে দিবসটি। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সব মানুষকে এটাই বলা হচ্ছে যে, শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন করতে পারেন শিক্ষকরাই। শিক্ষাক্ষেত্রে যে কোনো পরিবর্তন অবশ্যই শিক্ষকদের দিয়ে শুরু করতে হয়। অর্থাৎ শিক্ষকের পরিবর্তন হলেই শিক্ষার্থীর পরিবর্তন হয়। আর তখনই শিক্ষার পরিবর্তন ঘটে ৷
শিক্ষার আধুনিকীকরণ বিষয়টি অতি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয়েছে এ বছর জাতিসংঘের ‘ট্রান্সফর্মিং এডুকেশন’ অধিবেশনে। আগামী দিনে রূপান্তরিত এই শিক্ষার যাবতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীসহ বিশ্বের বরেণ্য নেতৃবৃন্দ।
আলোকিত সমাজ বিনির্মাণের মাধ্যমে একটি জাতি গঠনে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম। সমাজে বিরাজমান নিরক্ষরতা, কুসংস্কার দূরীকরণের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সমাজের কর্ণধার হিসেবে গড়ে তোলা শিক্ষকের মূল দায়িত্ব। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সুকুমার বৃত্তির বিকাশের মাধ্যমে নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মহৎ কাজ শিক্ষকরাই করে থাকেন ৷
পরিচ্ছন্ন ও সুষ্ঠু শিক্ষা বিস্তারের জন্য শিক্ষার্থীর অনুপাতে প্রয়োজনীয় শিক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহসহ যোগ্য, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ করা উচিত। শিক্ষকদের বেতন কাঠামো এবং প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এমনভাবে নিশ্চিত করা উচিত, যাতে স্বচ্ছন্দে তারা জীবনযাপন করতে পারে। দূর করা উচিত সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে বেতন বৈষম্য। বেসরকারি স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ও মহার্ঘ ভাতা নিয়ে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ আছে ।
দেশের বিপদে শিক্ষকরা সবসময়ই সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ৷ বর্তমানে শিক্ষকের মর্যাদা আগের মতো নেই, সারাদেশে বিভিন্নভাবে শিক্ষক নির্যাতিত হচ্ছে ৷ বর্তমান সমাজব্যবস্থা এর জন্য দায়ী ৷ এ অবস্থা থেকে উত্তরণ প্রয়োজন ৷ শিক্ষকের প্রাপ্য সম্মান ফিরে আসুক ৷ শিক্ষক দিবসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ের জন্য শুভ কামনা ৷
লেখক: শিক্ষক, কবি ও গল্পকার ৷
Posted ২:০৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২
Desh24.news | Azad
.