আব্দুর রাজ্জাক, (মানিকগঞ্জ) | শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | প্রিন্ট
(কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলছে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম। ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশের এক কোটি মানুষকে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শুরু হয়েছে গণটিকা কার্যক্রম। এরপরে সীমিত পরিসরে প্রয়োজন বিবেচনায় কিছু কেন্দ্রে প্রথম ডোজ দেওয়া হলেও কার্যত ২৬ ফেব্রুয়ারিই শেষবারের মতো প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার ঘোষনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, “টিকা গ্রহনে দেশের মানুষের বিপুল চাহিদার কথা বিবেচনা করে গণটিকা কার্যক্রম আরো দুই দিন বৃদ্ধি করা হলো। এর মধ্যে ১ম, ২য় ও বুস্টার ডোজ দেবার কার্যক্রমও চলমান থাকবে।”
শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে উপজেলার টিকা দান কেন্দ্রগুলোতে একযোগে ২১ টি কেন্দ্রে শুরু হয়েছে ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইনের কার্যক্রম। ঘিওর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হাসিব আহ্সান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ক্যাম্পেইনে জন্মনিবন্ধন বা কোনো ধরনের কাগজপত্র না থাকলেও মোবাইল নম্বর দিয়েই ভ্যাকসিন নেয়া যাবে। মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে তাদের তথ্য নথিভুক্ত করে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। তাদের একটি করে কার্ড দেওয়া হবে।
আজ (শনিবার ) উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্র, বাষ্টিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বাষ্টিয়া কমিউনিটি ক্লিনিক কেন্দ্র, পয়লা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে, তরা তাঁত পল্লী কেন্দ্র ও ঘিওর সদর কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় ভ্যাকসিন নিতে আসা মানুষের ভিড়। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এবং পুলিশ প্রশাসন স্থানীয় লোকজনকে উৎসাহিত করতে প্রচারও চালাচ্ছেন। এ কারণে মেস দিনে টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে মানুষের উস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
তরা তাঁত পল্লী কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সহকারী মেহেরুন নাহার বলেন, এই এলাকার প্রায় সব মানুষজনই টিকার আওতায় এসেছেন। বিশেষ সমস্যাজনিত কারনে যারা টিকা নিতে পারেন নি। পরবর্তীতে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বানিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসআর আনসারী বিল্টু বলেন- জনগণের টিকা নেওয়ার জন্য এই স্বত:স্ফুর্ত আগ্রহতেই আমরা আমাদের লক্ষ্যপূরণে দ্রুত পৌঁছে যেতে পারব। আশা করছি, বানিয়াজুরী ইউনিয়নের প্রায় মানুষকে টিকা নেওয়ার টার্গেট পূরণ হবে।
ঘিওর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হাসিব আহ্সান বলেন- করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘এক দিনে এক কোটি করোনার টিকাদান কার্যক্রম’। পরে দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ প্রদান কার্যক্রমও জোরদার করা হবে। তিনি আরো বলেন, ২১ টি কেন্দ্রে উপজেলায় পুরুষ ৬৫৫৭ জন এবং নারী ৯৬৭৬ জন মোট ১৬২৩৩ জন ব্যক্তিকে টিকা দান করা হয়েছে।
সকাল থেকেই টিকাপ্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। আজকের পর থেকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হবে না—এমন খবরে মূলত ভিড় বেড়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এসময় টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে সরজমিন পরিদর্শন করে খোঁজ খবর নেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান হাবিব, উপজেলা নির্বাহী অফিসার হামিদুর রহমান, ঘিওর থানার ওসি মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, ওসি তদন্ত মহব্বত খানসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
ঘিওর থানার ওসি মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোঃ গোলাম আজাদ খান স্যারের নির্দেশনায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এক কোটি টিকা সফলভাবে শতভাগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৭ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য সদস্যাদের নিয়ে মত বিনিময় করি। এছাড়াও ঘিওর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। ইতিপূর্বে পুলিশের উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকা থেকে যারা করোনার টিকা নেয়নি তাদের পুলিশ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় হাসপাতালে এনে টিকার ব্যবস্থাও করেছে। গ্রামের মানুষও অনেক সচেতন হয়েছে, আজকে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ টিকা নেয়ার দৃশ্য দেখে এটাই মনে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, উপজেলার একুশটি টিকাদান কেন্দ্র থানাপুলিশ সার্বক্ষণিক পরিদর্শন করেছে।
Posted ৬:৩৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
Desh24.news | Azad
.