ডেস্ক রিপোর্ট | শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট
মোঃ শফি আলম,ঘিওর (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা
এসএসসি পরীক্ষার পর পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ ২৬টি বছর। ১৬ বছরের সহপাঠীরা এখন ৪২ বছরের ব্যক্তি। সংসার ও পেশার ভারে বদলে গেছে কৈশোরের সেই চেহারা; ব্যস্ত সময়কে ছুটি দিয়ে ‘প্রাণের বন্ধনে, বন্ধুত্বের টানে’একত্র হয়েছিলেন তাঁরা। সাথে ছিল পরিবারের সদস্যরাও।
জমকালো আয়োজনে ২দিন ব্যাপী ঘিওর দূর্গা নারায়ন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের (৯৭ ব্যাচ) রজতজয়ন্তী ও পুনর্মিলনী হয়েছে। গতকাল শুক্রবার উপজেলার ডিএন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। এসএসসি ৯৭ ব্যাচ নামক সংগঠন এর আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সবাই এসেছিলেন স্বামী-স্ত্রী আর সন্তানের হাত ধরে। তবে এই দীর্ঘ সময়ে সবার মধ্য থেকে চিরতরে হারিয়ে যাওয়া ও উপস্থিত হতে না পারা বন্ধুকে স্মরণ করতেও ভোলেননি অংশগ্রহণকারীরা। আয়োজনের শুরুতে কোরআন তিলাওয়াত ও গীতাপাঠের মাধ্যমে প্রথম দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে সদস্যদের নিয়ে কেক কাটা, খাবার শেষে দেশের প্রতিথযশা শিল্পীদের পরিবেশনায় নাচ-গানের মাধ্যমে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়। দ্বিতীয় দিনেও জমকালো আয়োজন ও সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান সূচি রয়েছে। আয়োজনের মধ্যে ছিল শিক্ষকদের সম্মাননা, সংবর্ধনা, আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, স্মৃতিচারণা, র্যাফল ড্র, সাংস্কৃতিক পরিবেশনাসহ নানা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন ঢাকা ব্র্যান্ডের মাকসুদ, আঁখি আলমগীর, রিংকু, গামছা পলাশ, তুলি, নিথর মাহবুবসহ স্থানীয় শিল্পীরা।
আয়োজকেরা জানান, ৯৭ ব্যাচে এসএসসির শিক্ষার্থী ও তাঁদের পরিবার-পরিজন নিয়ে অনুষ্ঠান হয়েছে। এতে প্রায় ৬০০ মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে বন্ধুরা সবাই একত্র হয়েছেন। এই সম্মিলন সুখে-দুঃখে বন্ধুদের পাশে থাকার অঙ্গীকারে আরও গভীর করবে বলে সবার প্রত্যাশা।
আয়োজকদের অন্যতম এক সদস্য সুব্রত কুমার শীল গোবিন্দ বলেন এসএসসি পেরোনোর দীর্ঘ ২৬ বছর পর এই প্রথম ৯৭ ব্যাচের রজতজয়ন্তী ও পুনর্মিলনী হলো। স্কুলজীবন শেষে দীর্ঘ সময় পর দূরদূরান্ত থেকে আসা সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হয়। তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও আনন্দের কোনো কমতি ছিল না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রজত জয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহবায়ক দেবাশীষ রায়। আমন্ত্রিত হয়ে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের এমপি নাঈমুর রহমান দূর্জয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সাবেক সচিব অমিতাভ সরকার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দিন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, বর্ষীয়ান রাজনীতিবীদ শচীন্দ্র নাথ মিত্র, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান শিকদার প্রমুখ।
পুনর্মিলনীতে যোগ দিতে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকা থেকে এসেছেন ৯৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী সালাহউদ্দীন তমাল। তাঁর স্ত্রী মাহফুজা এই অনুষ্ঠানে গান গাইতে পেরে ভীষন খুশি। উচ্ছসিত সালাহউদ্দীন বলেন, ‘স্কুলজীবন শেষ হয়েছে কবে! দীর্ঘ ২৬ বছর পর এত বন্ধুকে একসঙ্গে কাছে পেয়ে কী যে আনন্দ লাগছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। স্বামী-সন্তানদের নিয়ে এসে দারুণ উপভোগ করলাম। দিনটি আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
আয়োজকদের মধ্যে ছিলেন উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার, সুব্রত কুমার শীল গোবিন্দ, মীর্জা সালেম, জিয়াউল হক জিয়া, বুলবুল আহমেদ, মোয়াজ্জেম হোসেন, মুনমন, কানিজ ফাতেমা প্রমুখ।
Posted ৭:৫০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩
Desh24.news | Azad
.
.