সোমবার ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

পেটে কাঁচি রেখেই সেলাই, ৬৪৮ দিন পর অপসারণ

ডেস্ক রিপোর্ট   |   রবিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট  

পেটে কাঁচি রেখেই সেলাই, ৬৪৮ দিন পর অপসারণ

ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মনিরা খাতুনের (১৯) পেটে অস্ত্রোপচার হয়েছিল ২০২০ সালের ৩ মার্চ। সেই সময় ভুলে তার পেটে একটি কাঁচি রেখেই সেলাই করেন চিকিৎসক। এরপর কেটে গেছে ৬৪৮ দিন। পেটে এ কাঁচি নিয়েই বেঁচে ছিলেন মনিরা।

 


দীর্ঘ এ সময়ের পর আজ শনিবার ওই হাসপাতালেই পুনরায় অস্ত্রোপচার করে তার পেট থেকে কাঁচিটি বের করা হয়। মনিরা খাতুন গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝুটিগ্রামের বাসিন্দা খাইরুল মিয়ার মেয়ে।

 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩ মার্চ ওই হাসপাতালের সার্জারি বিভাগ ইউনিট-২ এ ভর্তি ও অস্ত্রোপচার হয় মনিরার। রক্তের দলাজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই সময় তার পেটের মধ্যে চিকিৎসকদের অজ্ঞাতসারে ওই কাঁচিটি রেখে সেলাই করা হয়।

 

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ওই তরুণীর ভাই মো. কাইয়ুম জানান, অস্ত্রোপচারের আগে আট দিন এবং অস্ত্রোপচারের পরে ৯ দিন তার বোন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অস্ত্রোপচারের কয়েক দিন পরই মনিরাকে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার পৈলানপট্টি গ্রামে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পরও তার পেটে ব্যথা ছিল। এরপর অন্তঃসত্ত্বা হয়। পরে মনিরার পেটের বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেলে তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন স্বামী।

 

তিনি জানান, এরপরও বিভিন্ন গ্রাম্য চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু তার পেট ব্যথা কমেনি। ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে প্রায় দুই বছর ধরে চাপিয়ে রাখেন পেট ব্যথা। গত দুদিন আগে তার পেটে অসহনীয় ব্যথা উঠলে বুধবার (৮ ডিসেম্বর) মুকসুদপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য আনা হয়। ওই ক্লিনিকে এক্স-রের মাধ্যমে চিকিৎসক দেখতে পান মনিরার পেটের মধ্যে একটি কাঁচি রয়েছে।

 

গতকাল শুক্রবার মনিরাকে ফরিদপুর নিয়ে আসা হয়। এখানে এসে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে আবার এক্স-রে করা হলে ওই একই জিনিস পাওয়া যায়। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মনিরার অস্ত্রোপচার করা হয়। এতে অংশ নেন সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রতন কুমার সাহা, সহযোগী অধ্যাপক মোল্লা সরফউদ্দিন ও রেজিস্ট্রার সালেহ মো. সৌরভ। তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচার শেষে পেট থেকে কাঁচিটি বের করা হয়।

 

অধ্যাপক ডা. রতন কুমার সাহা বলেন, ‘তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। মনিরার জ্ঞানও ফিরেছে। দীর্ঘদিন কাঁচিটি পেটের মধ্যে থাকায় পেটের নাড়ি পেঁচিয়ে যায় এবং একটি নাড়িতে পচন দেখা দিয়েছে।’

 

তিনি বলেন, ‘রোগী নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। ৭২ ঘণ্টা না গেলে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

 

গত বছর অস্ত্রোপচারের সময় কাঁচিটি পেটে রয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটি করা হবে। কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Facebook Comments Box

Posted ১২:০৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২১

Desh24.news |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
এম আজাদ হোসেন সম্পাদক ও প্রকাশক
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয়

শ্রীসদাস লেন,বাংলাবাজার , ঢাকা-১১০০/ ঘিওর, মানিকগঞ্জ।

হেল্প লাইনঃ +৮৮০১৯১১৪৭৭১৪১/০১৯১১২২৭৯০৭

E-mail: infodesh24@gmail.com