ঘিওর ( মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি | শনিবার, ০৯ এপ্রিল ২০২২ | প্রিন্ট
মানিকগঞ্জের ঘিওরে হেভিওয়েট ব্যক্তির দুই গ্রুপের দ্বন্দের নিষ্পত্তি করলেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ। এতে রক্তক্ষয়ী ও সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের হাত থেকে রক্ষা পেল এলাকাবাসী।
মন্দির কমিটির মিটিং, হিসাবপত্র জমা দেওয়া ও নয়া কমিটি গঠন নিয়ে এই বিরোধের কারন বলে জানান স্থানীয়রা। বিবাদমান বিরোধের একপক্ষে জেলা আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক হামিদুর রহমান আলাই ও অপরপক্ষে উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি লিটন কুমার আইস। গত দুইদিন (শুক্র ও শনিবার) দুই হেভিওয়েট গ্রুপের দ্বন্দ ছিল উপজেলায় আলোচনার মূল বিষয়। এনিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন বিপরীত গ্রুপের দোষারোপ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক ইস্ট্যাটাস দেন। এনিয়ে তুমুল হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।
আজ শনিবার বিকেলে ঘিওর ডাক বাংলো মিলনায়তনে সাংসদ এ এম নাঈমূর রহমান দূর্জয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সালিশী বৈঠক এই বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু মোঃ তায়েবুর রহমান টিপু, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা এ্যাডঃ শচিন্দ্র নাথ মিত্র, জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজা, ঘিওর থানার ওসি মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল আলীম মিন্টু, সহ সভাপতি আতোয়ার রহমান, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শামসুল আলম খান, দপ্তর সম্পাদক গৌরাঙ্গ কুমার ঘোষ, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি লিটন কুমার আইস, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বাবুল বেপারী, সাধারন সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, বাজার ব্যবস্থাপনা পরিষদের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মতিন মুসা, ঘিওর কালীবাড়ি নাট মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি রাম চন্দ্র সাহা, সাধারন সম্পাদক প্রশান্ত সরকার সন্টু, ঘিওর প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক রাম প্রসাদ সরকার দীপুসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে নোটিশের মাধ্যমে ১৬২ বছরের পুরাতন ঘিওর কেন্দ্রীয় কালিবাড়ি নাট মন্দির কমিটির সাধারন সভা আহবান করা হয়। এই সভায় পুরাতন কমিটির আয় ব্যয় হিসাব, নতুন কমিটি গঠন সংক্রান্ত বিষয় ছিল মূল প্রতিপাদ্য। গত শুক্রবার রাত আটটায় ছিল মন্দির কমিটি ও সদস্যদের মিটিং। কিন্তু পূর্বঘোষিত কোন সিদ্ধান্ত ব্যতিত কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক সভা বাতিল করে মন্দিরে তালা দিয়ে চলে যান। মন্দিরের ভেতরে একটি নোটিশ টাঙিয়ে দেন তারা। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই লোকজন মিটিংয়ে আসতে থাকেন। তারা মন্দিরে তালা দেখে উত্তেজিত হয়ে পরেন। পরে মন্দির কমিটির সভাপতি রাম চন্দ্র সাহা ও সাধারন সম্পাদক প্রশান্ত সরকার সন্টু, জেলা আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক হামিদুর রহমান আলাই, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল আলীম মিন্টু, দপ্তর সম্পাদক গৌরাঙ্গ কুমার ঘোষসহ আরো কয়েকজন নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তি এঘটনার সমাধানে মন্দির প্রাঙ্গনে যান। উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি লিটন কুমার আইসের সাথে হামিদুর রহমান আলাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। মূহুর্তেই উপস্থিত লোকজনের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। রাত ১০ টার দিকে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুস সালাম পিপি উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে থানায় বসে আজ শনিবার এমপি দূর্জয়ের উপস্থিতিতে মিমাংসা করার ঘোষনা দেন।
এরই প্রেক্ষিতে আজ শনিবার বিকেলে এমপির উপস্থিতিতে সালিশী বৈঠকে উভয় পক্ষের ভুল বুঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে তাদের কোলাকুলি করে মিলিয়ে দেন সাংসদ দূর্জয়।
উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি লিটন কুমার আইস বলেন, এমপি মহোদয় ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে আপোষ করা হয়েছে। এতে আমরা সন্তোষ্ট।
জেলা আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক হামিদুর রহমান আলাই বলেন, সামান্য ভুল বুঝাবুঝিতে এই ঘটনা। লিটনের সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। কয়েকজন উষ্কানীমূলক কথা বলে ঘটনাটি অন্যদিকে মোড় ঘুড়িয়েছিলেন, কিন্তু সবাই সচেতন থাকায় বড় ধরনের কোন কিছু ঘটেনি। এমপি সাহেব মিমাংসা করে দিয়েছেন। এখন কোন সমস্যা নেই।
সালিশী মিমাংসার পর এমপি দূর্জয় বলেন, দীর্ঘদিনের সাম্প্র্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রাখার লক্ষ্যে উভয় পক্ষের ভুল বুঝাবুঝির অবসান ঘটেছে। ভবিষৎতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য সবাইকে অনুরোধ করেন।
বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এমপির এমন তড়িৎ ও মহতি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
Posted ৭:৩৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৯ এপ্রিল ২০২২
Desh24.news | Azad
.