
মো: নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি | বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় করোনার প্রকোপ কমলেও আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাবে হঠাৎ মৌসুমী জ্বর ও সর্দি রোগী বেড়ে যাওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতেও জ্বর, সর্দি, কাশি, শরীর ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জনবল সংকট নিয়ে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীরা। অন্যদিকে জ্বরের প্রভাবে স্থানীয় ঔষধ দোকানগুলোতে প্যারাসিটামল গ্রুপের ট্যাবলেট কেনার হিড়িক পড়েছে। আর এই সময়ে হঠাৎ বাজার ও ফার্মেসী থেকে উধাও হয়েছে প্যারাসিটামল গ্রুপের ঔষধ। তবে আতংকিত না হয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান চিকিৎসকরা। এই রোদ এই বৃষ্টি এ ধরণের আবহাওয়ার কারণে সর্দি-কাশির সঙ্গে বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ। দিনের তাপমাত্রা বাড়লে গভীর রাত কিংবা ভোরের দিকে বেশ ঠাণ্ডা পড়ে। সব মিলিয়ে এই ধরনের আবহাওয়া মানুষকে অনেকটাই কাবু করে ফেলছে।
সরেজমিনে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা প্রায় ৫০ ভাগেরও বেশি রোগীই জ্বর-সর্দি, কাশি ও দূর্বলতা নিয়ে আসছে। এর মধ্যে অনেকেই চিকিৎসক দেখানোর পর বাসায় ফিরছে আর যাদের সমস্যা গুরুতর তারা ভর্তি হয়ে সেবা নিচ্ছে। এরমধ্যে গত এক সপ্তাহে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ ও বর্হিবিভাগে জ্বরের রোগী সেবা নিয়েছে ১২শ জন এবং অন্তঃবিভাগে সেবা নিয়েছেন প্রায় ২৩০ জন। রোগীদের সেবায় চিকিৎসক, নার্স-মিডওয়াইফ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বিরামহীন কাজ করে যাচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: শাামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, করোনা ভাইরাস নয় ঋতু পরিবর্তনেরও প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এ কারনে এবং সাধারণ ভাইরাসে আক্রান্তের হার বাড়াই সবখানেই এখন জ্বর, সর্দি ও জ্বর পরবর্তী সময়ে শরীর দূর্বলতার রোগী বাড়ছে। এই সময়ে নিয়ম মেনে চলা, মাস্ক পড়া ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা জরুরী।
তবে উপজেলার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র পাকেরহাটে ঔষধের দোকানগুলোতে পুরো দেশে রোগীদের চাহিদার শীর্ষে থাকা বেক্সিমকো গ্রুপের নাপা, নাপা এক্সট্রা, নাপা এক্সটেন্ড, নাপা সিরাপ, স্কয়ার কোম্পানির এইচ প্লাস, এইস এক্সট্রা, এইস সিরাপ ও একমি কোম্পানির ফাস্ট, ফাস্ট প্লাস, ফাস্ট এক্সার, ফাস্ট সিরাপ এবং এসব কোম্পানির এজিথ্রোমাইসিন গ্রুপের ট্যাবলেট, সিরাপ ও ইনজেকশন সংকটের কথা শোনা গেছে।
দোকানে দোকানে ঘুরেও এসব ঔষধ না পেয়ে হতাশ হচ্ছেন রোগী ও স্বজনরা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা। ছোট ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে আছেন ঔষধ কোম্পানির এজেন্টদের দিকে। বড় ঔষধ ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানি থেকেই এসব গ্রুপের ঔষধের ডেলিভারি অনেক কম।
পাকেরহাট এ.এফ.আর মেডিসিন মার্টের সত্ত্বাধিকারী বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, রোগীদের কাছে যেসব ঔষধের চাহিদা বেশী সেসব কোম্পানি যে পরিমাণ ঔষধ সরবরাহ করে তা চাহিদার তুলনায় একেবারে অপ্রতুল। গত ৮-১০ দিন ধরে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই কোম্পানি গুলোকে ঔষধের জন্য তাগিদ দেয়া হচ্ছে। তবে অন্য কোম্পানির প্যারাসিটামল গ্রুপের পর্যাপ্ত ঔষধ আছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. মো. মিজানুর রহমান বলেন , এটি মৌসুমী জ্বরের প্রকোপ তাই আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। আর বাজারে এসব কোম্পানির প্যারাসিটামল গ্রুপের ঔষধ সংকটের কথা শুনেছি। তবে সাধারণ জ্বর, মাথা-ব্যথার ক্ষেত্রে এসবই একমাত্র ওষুধ না।বাজারে অন্য কোম্পানিরও ভালো ঔষধ আছে এবং হাসপাতালে প্যারাসিটামল গ্রুপের পর্যাপ্ত ঔষধ আছে।
Posted ৯:৪৮ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
Desh24.news | Azad
.
.