মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার সিংজুরি ইউনিয়নের আশাপুর এলাকার কালিগঙ্গা নদীতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের সংবাদ সংগ্রহকালে দৈনিক ভোরের কাগজের মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ড্রেজার ব্যবসায়ীর হাতে লাঞ্চিত হয়েছেন।
গতকাল বুধবার নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক সুরেশ চন্দ্র রায় ঘিওর থানায় জিডি করেছেন। জিডি নং-৫৭১।
এর আগে মঙ্গলবার(১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আশাপুর সড়কঘাটা এলাকার কালিগঙ্গা নদীর পাড়ে এ ঘটনা ঘটে।
শারীরিক নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক সুরেশ চন্দ্র রায় জানান, সিংজুরি ইউনিয়নের আশাপুর সড়কঘাটা ও মির্জাপুর এলাকার কালিগঙ্গা নদীতে রতন মেম্বার ও সানোয়ার পীরসাবের দুটো অবৈধ ড্রেজার দীর্ঘদিন চলমান রয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে চলমান ড্রেজারের ছবি, ভিডিও ও তথ্য সংগ্রহ করে চলে আসতে থাকি। এসময় সিংজুরি ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার ও ড্রেজার ব্যবসায়ী রতন মিয়া আমার গতিরোধ করে বিশ হাজার টাকা অফার করেন এবং তাঁর মোবাইলে ধারণকৃত ড্রেজারের ছবি, ভিডিও ও ডকুমেন্ট কেটে ফেলতে বলেন। কিন্তু আমি মেম্বারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে মেম্বার আমার হাত থেকে তার ভাই আলামিনকে মোবাইল কেড়ে নিতে বলেন। কিন্ত মোবাইল দিতে না চাইলে রতন মেম্বার, তার ভাই আলামিন ও ড্রেজারের শ্রমিক শাহআলম আমাকে শারীরিক নির্যাতন করতে থাকেন। এদের হাত থেকে বাঁচতে চিৎকার করলে এলাকার লোকজন ছুটে আসেন। তখন ড্রেজার ব্যবসায়ীরা চলে যায়। সন্ধ্যার পরে আমি ঘিওর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করি।
আশাপুর সড়কঘাটা এলাকার স্থানীয়রা জানান, রতন মেম্বার ও সানোয়ার পীরসাব দীর্ঘদিন যাবৎ কালিগঙ্গা নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছেন, কিন্তু রহস্যজনক কারণে এপর্যন্ত প্রশাসন এখানে কোন অভিযান করেনি। তারা অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য বন্ধের দাবি করেন।
সিংজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান মিঠু জানান, রতন মেম্বার দীর্ঘদিন যাবৎ ড্রেজার ব্যবসার সাথে জড়িত। এব্যবসা না করার জন্য অনেকবার রতন মিয়াকে নিষেধ করেছি, কিন্তু তিনি কর্ণপাত করেননি। রতন মেম্বার একজন সাংবাদিকের গায়ে হাত দিয়ে অত্যন্ত খারাপ কাজ করেছেন। এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
ঘিওর থানা অফিসার ইনচার্জ সুকুমার বিশ্বাস বলেন, একজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করবেন,এটাই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে যদি সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হন-সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং শতভাগ অন্যায়। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এবিষয়ে বক্তব্য নিতে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক রেহেনা আক্তার বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।