সুরেশ চন্দ্র রায়, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি। | বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পালিত হয়েছে তেরশ্রী গণহত্যা দিবস।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) সকালে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পাস্তবক অর্পণ, কোরআন তেলোওয়াত, গীতা পাঠ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, নিরবতা পালন, আলোচনা সভা ও র্যালির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করা হয়েছে।
তেরশ্রী শহীদ স্মৃতি পরিষদের সভাপতি আব্দুল আজিজের সভাপতিত্বে গণহত্যা দিবসে উপস্থিত ছিলেন- মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার, জেলা পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফা নাজনীন, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. গোলাম মহীউদ্দিন, মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাংসদের প্রতিনিধিবৃন্দ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার মোমিন উদ্দিন খান, ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোহছেন উদ্দিন খান, ঘিওর থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আমিনুর রহমান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।
তেরশ্রীবাসী জানান, বামপন্থী রাজনীতির কেন্দ্র বিন্দু ছিল তেরশ্রী। এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের আনাগোনা ছিল সবচেয়ে বেশি। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর দোসররা এই গ্রামটিকে টার্গেট করে শিক্ষানুরাগী, মুক্তিযোদ্ধা, ভাষা সৈনিক, রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবীদের তালিকা প্রস্তুত করে। পরবর্তীতে, নীল নকশার মাধ্যমে রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্থানী বাহিনী ৭ ঘণ্টার অপারেশনে বেনয়েট চার্জ ও গুলি করে ৪৩ জন স্বাধীনতাকামীকে হত্যা করে। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী জমিদার বাড়ির এই বর্বরতাকে তেরশ্রী ট্রাজেডি দিবস ও তেরশ্রী গণহত্যা দিবস হিসেবে খ্যাত। ৫২ বছর যাবৎ দিবসটি শ্রদ্ধার সাথে পালন করা হচ্ছে। ১৯৯৮ সালে মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের কয়েকটি রাজনৈতিক দল, স্থানীয় তরুণ সমাজ এবং স্কুল শিক্ষকদের চেষ্টায় তেরশ্রীতে একটি স্মৃতি পরিষদ গঠন করা হয়। একই বছরে ২৭ ডিসেম্বর সেখানে একটি স্মৃতিসৌধ ফলক উন্মোচন করা হয়। ফলক উন্মোচন করেন শহীদ জমিদার সিদ্ধেশ্বরী প্রসাদ রায়চৌধুরীর স্ত্রী গায়ত্রী দেবী চৌধুরানী। ২০১২ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর শহীদদের সম্মানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেন।
তারা দুঃখ প্রকাশ করে প্রতিবেদককে আরও জানান, স্বাধীনতার ৫২ বছর অতিবাহিত হলেও সেনপাড়া গ্রামের মানুষগুলো আজ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের বিচার পায়নি এবং তৈরি করা হয়নি নিহত ৪৩ জনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা। যাঁদের পরিচয় পাওয়া যায় তাঁরা হলেন-তেরশ্রীর জমিদার সিদ্ধেশ্বরী প্রসাদ রায় চৌধুরী, তেরশ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আতিয়ার রহমান, স্থানীয় স্কুলের দপ্তরি মাখন চন্দ্র সরকার, যাদব চন্দ্র দত্ত, তাঁর পুত্র মাধব চন্দ্র দত্ত, সাধুচরণ দাস, শ্যামল সূত্রধর, নিতাই চন্দ্র দাস, জগদীশ চন্দ্র দাস, সুধন্য চন্দ্র দাস, সুরেন্দ্রনাথ সাহা, প্রাণনাথ সাহা, যোগেশ চন্দ্র ঘোষ, সাধন কুমার সরকার, যোগেশ চন্দ্র দাস, রামচরণ সূত্রধর, রাধাবল্লভ নাগ, ভোলা নাথ, জ্ঞানেন্দ্র ঘোষ, যোগেশ সূত্রধর, মো. কফিল উদ্দিন, মো. গেদা মিয়া, মো. একলাছ মিয়া, শ্যামাপ্রসাদ নাগ, নারায়ণ চন্দ্র সূত্রধর, শচীন্দ্রনাথ গোস্বামী, যোগেশ দত্ত, গৌর চন্দ্র দাস, মো.তফিল উদ্দিন, মো.তাজুদ্দিন ও মনিন্দ্র চন্দ্র দাস।
Posted ১০:১২ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩
Desh24.news | Azad
.