আব্দুর রাজ্জাক, (মানিকগঞ্জ ) | রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১ | প্রিন্ট
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় ইছামতী, পুরাতন ধলেশ্বরী ও কালীগঙ্গা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ক্রমেই নদীতীরে দীর্ঘ হচ্ছে ভিটে মাটি হারা মানুষের সারি। অসহায় মানুষদের অভিযোগ এখনও পর্যন্ত সহযোগিতার জন্য কেউ এগিয়ে আসেননি। এখন নিয়তির উপর নিজেদের ছেড়ে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
অব্যাহত ভাঙনে নদী গর্ভে চলে গেছে প্রায় অর্ধশত বসতভিটা, ব্রিজ, কালভার্ট ও ফসলি জমি। হুমকির মধ্যে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শতাধিক বসতবাড়ি, শত বছরের ঐতিহ্যবাহী গরুর হাটসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা। নদী তীরে ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে ভিটামাটি হারা মানুষের সারি।
সরেজমিন দেখা গেছে, ঘিওর সদর ইউনিয়নের বড় রামকান্তপুর- কুঠিবাড়ি এলাকায় ইছামতি শাখা নদীর ভাঙন আতংকে রয়েছে কমপক্ষে ২৫ টি পরিবার। অনেকের বাড়ির অর্ধেক অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আসবাবপত্র আর অন্যান্য সামগ্রী অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আর ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ২০ টি পরিবারের শতাধিক মানুষের দিন রাত কাটছে ভাঙন আতংকে।
ইছামতির শাখা নদীর ভাঙনে কুস্তা কফিল উদ্দিন দরজি উচ্চবিদ্যালয় ও শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘিওর গরুর হাট অর্ধেক বিলীন হয়ে গেছে। কুস্তা ব্রিজ, ঘিওর- গোলাপনগরের রাস্তা, বেপারীপাড়া কবরস্থান, রসুলপুর গ্রাম- কবরস্থান, বেপারীপাড়া কবরস্থানটি হুমকির মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়া পুরাতন ধলেশ্বরী নদীর ভাঙনে শ্রীধরনগর, কুস্তা, মাইলাগী, ঘিওর পূর্বপাড়া, ঘিওর নদীর উত্তর পারের বাজার এবং ব্রিজসহ ১২-১৩ টি প্রতিষ্ঠান হুমকির মধ্যে রয়েছে। ভয়াবহ হুমকীর মধ্যে রয়েছে উপজেলা সরকারী খাদ্য গুদাম। ইতিমধ্যে নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারানো মানুষজন আশ্রয় নিয়েছেন আত্নীয় স্বজন কিংবা সরকারী উঁচু জায়গায়।
অপর দিকে, কালীগঙ্গা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে ১ কিমি. কাঁচা রাস্তা ও কয়েকটি বসত বাড়ি। কালীগঙ্গার ভাঙনের হুমকিতে আছে শতাধিক বসতভিটা, একটি বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, এতিমখানা, শশ্মান মন্দির, ১টি ব্রিজ, বাজার, রাস্তাসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। এছাড়াও হুমকির মুখে রয়েছে বসত বাড়ি, ঘিওরের দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, বানিয়াজুরী ইউনিয়ের তরা শ্মশানঘাট, আঞ্চলিক সড়কের পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ইছামতি নদীর ভাঙনের কবলে পড়া মহাদেব শীল, বক্কার মিয়া, মোঃ মোস্তফা কামাল ও পারুল আক্তার বলেন, ছেলে মেয়ে সব সময় আতংকে থাকি। সারারাত এক ফোটাও ঘুমাতে পারিনা। কখন যেন নদীতে সব নিয়ে যায়। আমাদের বসত বাড়ি ভাঙন রোধে সরকারের সহযোগিতা চাই।
বানিয়াজুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চতু জানান, নদীর মাঝে বড় চড় জেগে ওঠায় নদীর পানি পাশের দু-কূল দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ভাঙনের শিকার হচ্ছে বিস্তীর্ণ ভূমি। নদীতীরবর্তী অনেক বসত বাড়ি ভাঙনের আতংকে দিনাতিপাত করছে। আর ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
ঘিওর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে আমরা সংশিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের নগদ অর্থসহ ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নাজমুল ইসলাম বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। একটি অংশে ভাঙন রোধে কাজ শুরু হয়েছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করেছি। ইতোমধ্যে প্রায় ৪ শতাধিক পরিবারের মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন, ভাঙ্গনরোধে তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে ধলেশ্বরী নদী পূর্নখনন কাজ ইতোমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকা আমি সরজমিন পরিদর্শন করেছি। ভাঙন রোধে ইতিমধ্যে জিও ব্যাগ ফেলো হচ্ছে।
Posted ৬:৩৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১
Desh24.news | Azad
.
.
আর্কাইভ
রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র | শনি |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | |||
৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ |
১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ |
১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ |
২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |