
আজিজুর রহমান, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি | শনিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২১ | প্রিন্ট
ফরিদপুরের সালথায় এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঠিপেটার অভিযোগ এনে সালথা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। তাকে অপসারনের দাবিতে শনিবার (৯ জানুয়ারী) দুপুরে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এই আল্টিমেটাম দেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, সাবেক উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহদাৎ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিকুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা রত্তন মাতুব্বর, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের সদস্য সচিব কাজী এরশাদ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কমিটির সভাপতি মাহাবুব হোসেন প্রমুখ।
সমাবেশে তারা জানান, ৮ জানুয়ারী উপজেলার মাঝারদিয়া এলাকায় দু’পক্ষের দলাদলির কারনে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই সংঘর্ষের এক পর্যায়ে মাঝারদিয়া ইউনিয়নের খলিশপুট্টি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোশাররফ হোসেনসহ বয়োজৈষ্ঠ ৫/৭জন লোক মিমাংসার জন্য ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে কিছু লোক তাদের জানায়, অবস্থা খুব খারাপ ঐদিকে যাওয়া যাবে না। তারা তখন ঐখান থেকে ফেরার পথে পুলিশের লাঠিচার্জ দেখে সতর্কতার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেয় এবং তার গায়ে পরিহিত কোর্টে মুক্তিযোদ্ধার নেমপ্লেট ছিলো। তাদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিলো না, তারা সংঘর্ষের কাছেও যায়নি। তারা বলেছে আমরা মিমাংসার জন্য এসেছিলাম, আমাদের গায়ে হাত দিয়েন না। তারপরই পুলিশের এক কনস্টেবল গিয়ে তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং ওসি নিজে গিয়ে লাঠিচার্জ করে ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে “মুক্তিযোদ্ধা মারে ঠেঙ্গাই”। লাঠিচার্জের কারনে আহত হলে অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে সালথা থানার একজন পুলিশও গিয়ে তার খোজ খবর নেয়নি।
এ সময় বক্তারা বলেন, এই ঘটনায় আমরা বিচার চাইনা, আমরা ওসির অপসারন চাই। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই ওসিকে অপসারনের দাবি করছি। অপসারন না করলে আমরা আবার রাজপথে নামবো।
প্রতিবাদ সমাবেশে এই ঘটনাকে “ন্যাক্কারজনক ঘটনা উল্লেখ করে” সাবেক উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা আজ মর্মাহত, এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। যে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছে, তারা আজ লাঞ্চিত। এই ওসির কান্ড আমাদের মর্মাহত করে তুলেছে। আমরা ওসি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারনের দাবি জানাচ্ছি।
এ ঘটনার ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। হামলার ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল মাঝারদিয়া কাইজ্যা হয়। গ্যাঞ্জামের খবর পেয়ে বের হই। এ সময় কয়েকজন লোক বলেন, আপনি মুক্তিযোদ্ধা, দেখেন ঠেকানো যায় কি-না। এরপর আগালে পরিস্থিতি খারাপ দেখে ফিরে আসার পথে দেখি পুলিশ লাঠি নিয়ে আসতেছে। তখন আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেই, পুলিশ জানার পরও ওসির নির্দেশে আমাকে মারধর করে। আমি পরে গেলে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে সালথা থানার ওসি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এ প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান, এ বিষয়ে আমি কি বক্তব্য দিবো, তারা সমাবেশ করছে করুক। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। এবং এ ঘটনায় সাথে আমি জড়িত নই।
Posted ৮:০৩ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২১
Desh24.news | Mollah Azad
.
.